তালগোল পাকিয়ে বাড়লো শেয়ারবাজারের সূচক
সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মূল্য সূচক কিছুটা বেড়েছে। অবশ্য লেনদেন শেষ হওয়ার ১৩ মিনিট আগেও সূচকটি ঋণাত্মক ছিল। অথচ সূচকের বড় উত্থানের মাধ্যমে লেনদেন শুরু হয়েছিল।
এদিন লেনদেন শুরু আধাঘণ্টার মধ্যে মূল্য সূচকে বেশ অস্থিরতা দেখা যায়। এই উত্থান তো এই পতন দফায় দফায় ঘটে এমন ঘটনা। যা লেনদেন শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত অব্যহত থাকে। ফলে লেনদেন শেষ হওয়ার এক মিনিট আগেও বোঝায় যাচ্ছিল না দিন শেষ মূল্য সূচক কী অবস্থায় দাঁড়াবে।
এমন তালগোল পাকিয়ে লেনদেন শেষে সূচক ঊর্ধ্বমুখীই থেকেছে। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। সেই সঙ্গে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এরপরও বেড়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধান।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা। যা আগের কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ছিল ৩ লাখ ৮৪ হাজার ৪৬৭ টাকা। এ হিসাবে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২৭৫ কোটি টাকা।
বাজার মূলধন বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৬১ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে। দিনভর বাজারটিতে ২১৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দরপতনের বিপরীতে দাম বেড়েছে ১১১টির। আর ২৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মূলত বড় মূলধনের কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার কারণে বাজার মূলধন বেড়েছে। একই কারণে বেড়েছে মূল্য সূচকও। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় দশমিক ৬৭ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১৩৩ পয়েন্টে।
সূচকটির এমন নামমাত্র উত্থান হলেও দিনের শুরু ছিল বেশ ভালো। লেনদেনের প্রথম ১০ মিনিটেই সূচকটি ২৭ পয়েন্ট বেড়ে যায়। কিন্তু এর পরেই ঘটে ছন্দ পতন। সূচকটি টানা নিম্নমুখী হয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ১৪ পয়েন্ট পড়ে যায়। এরপর অন্তত ১১ দফা সূচকটির উত্থান-পতন ঘটে।
ডিএসইর অপর দুই সূচকেও দিনভর কয়েক দফা উত্থান-পতন হলেও প্রধান মূল্য সূচকের মতো এতো অস্থির ছিল না। প্রধান সূচকে মতো ডিএসই-৩০ এবং ডিএসই শরিয়াহ্ দুটি সূচকই কিছুটা বেড়েছে। এর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৩৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর শরিয়াহ সূচক ২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৭৬ পয়েন্টে।
সব সূচকের উত্থান হলেও বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। দিনভর বাজারটিতে ৪০৬ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৬৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ লেনদেন কমেছে ৬১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।
টাকার অংকে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশনের শেয়ার। কোম্পানিটির ২১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ১৯ কোটি ৯ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর ১৬ কোটি ৬১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফরচুন সুজ।
এছাড়া বাজারে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- মুন্নু সিরামিক, এসইএমএল লেকচার ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট ফান্ড, সিঙ্গার বাংলাদেশ, বিকন ফার্মাসিউটিক্যাল, ফিনিক্স ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ড, জেএমআই সিরিঞ্জ এবং প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৭১৬ পয়েন্টে। বাজারে হাত বদল হওয়া ২৭১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৯২টির, কমেছে ১৫১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টির দাম। লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
এমএএস/এএইচ/জেআইএম