কপারটেক তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিল ডিএসই
আইনগতভাবে সুযোগ না থাকলেও কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদ।
সোমবার ডিএসইর পর্ষদ সভায় শর্তসাপেক্ষে কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দেয়া হয়। ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদের একাধিক সদস্য বিষয়টি নিশ্চিত করলেও কেউ নাম প্রকাশ করতে চাননি।
আইন লঙ্ঘন করে এখন কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে তালিকাভুক্তি অনুমোদন দিলেও আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়মের অভিযোগে এর আগে কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্ত না করায় গো ধরেছিল ডিএসই।
এমনকি ডিএসইর পক্ষ থেকে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) কাছে অভিযোগও করা হয়। অভিযোগ পেয়ে তা তদন্তের জন্য এফআরসি থেকে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশকে (আইসিএবি) দায়িত্ব দেয়া হয়। আইসিএবি’র তদন্তে অসহযোগিতা করায় কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আহমেদ অ্যান্ড আক্তারকে লাইসেন্স হারাতে হয়েছে।
ডিএসইর পর্ষদের বেঁকে বসার কারণে যে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ কাণ্ডে এতো কিছু হলো, এখন সেই ডিএসইর পর্ষদই আইন লঙ্ঘন করে কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিল।
এ বিষয়ে ডিএসইর পর্ষদের এক সদস্য বলেন, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের তালিকাভুক্তির জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা পার হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্ত করার আইনগত কোনো সুযোগ নেই। তবে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সময় বাড়ানোর অনুমোদন সাপেক্ষে কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে ডিএসই থেকে শিগগিরই সময় বাড়ানোর জন্য বিএসইসিকে চিঠি দেয়া হবে।
ডিএসই’র তালিকাভুক্তির নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করলে ওই কোম্পানির আইপিও সাবস্ক্রিপশন (আইপিও আবেদন গ্রহণ) শেষ হওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তালিকাভুক্ত হতে হবে। তবে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের ক্ষেত্রে সেই সময় অনেক আগেই পার হয়ে গেছে।
কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারবাজার থেকে ২ কোটি শেয়ার ছেড়ে ২০ কোটি টাকা উত্তোলন করার অনুমোদন পায়। এ টাকা উত্তোলনে ৩১ মার্চ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত কোম্পানিটির আইপিওতে আবেদন গ্রহণ করা হয়। ফলে চলতি বছরের ২৬ মে’র মধ্যে কোম্পানিটি ডিএসইতে তালিকাভুক্তির বাধ্যবাধকতা ছিল।
কিন্তু ডিএসই পর্ষদ অনুমোদন না দেয়ায় কোম্পানিটির তালিকাভুক্তি আটকে যায়। এরপর ডিএসই’র পর্ষদ কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্তির জন্য ২৩ জুন পর্যন্ত সময় দিয়ে বিএসইসির কাছে দিকনির্দেশনা চেয়ে চিঠি দেয়। তবে বিএসইসি ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কোনো দিকনির্দেশনা বা পরামর্শ দেয়া থেকে বিরত থাকে।
এ পরিস্থিতিতে গত ১১ জুলাই কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের তালিকাভুক্তির সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য ম্যানেজমেন্টের কাঁধে দায়িত্ব দেয় পরিচালনা পর্ষদ। এর আলোকে ম্যানেজমেন্ট কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের তালিকাভুক্তির বিষয়ে আইন-কানুন পর্যালোচনা করে, যা ডিএসইর পর্ষদ সভায় উপস্থাপন করা হয়। এরপর তা যাচাই-বাছাই করে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে শর্তসাপেক্ষে তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় ডিএসইর পর্ষদ।
এমএএস/জেএইচ/জেআইএম