‘কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ না থাকলে পাচারের সম্ভাবনা থাকে’
অপ্রদর্শিত আয় বা কালো টাকা বিনিয়োগের সুবিধা দেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায়। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ না থাকলে বিদেশে পাচার কিংবা কর ফাঁকির সম্ভাবনা থাকে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেজন্য যুক্তিসংগত কর প্রদান করে অপ্রদর্শিত আয় রিয়েল এস্টেট, অর্থনৈতিক অঞ্চল, হাইটেক পার্কে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। যদিও এই সুযোগ এক সময় ছিল।’
নতুন অর্থবছরের আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও শুল্ক সংক্রান্ত কিছু উপস্থাপনার সংক্ষেপে ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শুক্রবার (১৪ জুন) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাখ্যা দেন তিনি।
আরও পড়ুন>> পুঁজিবাজারে সুশাসন চান প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ বছর করমুক্ত আয়সীমা ও করহার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় আমাদের করহার কম। বিদ্যমান হারে আমাদের জনগণ কর প্রদানে অভ্যস্ত।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সর্ববৃহৎ রফতানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পে বিদ্যমান (করের) ব্যবহার খুবই সহনীয়, অর্থাৎ খুবই কম। গ্রিন ইন্ডাস্ট্রি বা সবুজ কারখানার ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে ১২ শতাংশ। টেক্সটাইল শিল্পে করহার ১৫ শতাংশ। উভয় শিল্পে প্রণোদনা দেয়ার জন্য ২০১৯-২০ সালেও এ করহার অপরিবর্তিত থাকবে।’
প্রবৃদ্ধি ও ব্যবসায় সহায়তা, কৃষি শিল্প ও ভৌত অবকাঠামো খাতে প্রায় ৩৫টি আইটেমে কর অবকাশ সুবিধা আরও পাঁচ বছরের জন্য বাড়ানো হয়েছে। সেই সঙ্গে আরও নতুন কিছু উপখাত অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
রীতি অনুযায়ী প্রতিবার বাজেট-উত্তর সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী। এবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অসুস্থ হওয়ায় সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়। এটি দেশের ৪৮তম এবং বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বাজেট।
‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শিরোনামে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয় ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট এটি।
গতকাল বেলা ৩টায় জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। শুরুতে বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে এটি তার প্রথম বাজেট।
আরও পড়ুন>> অর্থমন্ত্রীর জন্য দোয়া চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
দাঁড়িয়ে বাজেট বক্তৃতা শুরু করলেও পরে স্পিকারের অনুমতি নিয়ে অর্থমন্ত্রী নিজ আসনে বসে বাজেট উপস্থাপন করেন। কিন্তু বিকেল ৪টার পর অসুস্থ অর্থমন্ত্রীর পক্ষে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন সম্ভব না হওয়ায় স্পিকারের অনুমতি নিয়ে বাকি অংশ সংসদে উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পিডি/জেডএ/পিআর