বাজেটে সম্পদশালীরা সুবিধা পাবে : সিপিডি
‘প্রস্তাবিত বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে বাড়ানো হয়েছে সম্পদের ক্ষেত্রে সারচার্জের সীমা। অর্থাৎ যারা আয় করে তাদের জন্য সুবিধা দেয়া হয়নি। অথচ সম্পদশালীদের সুবিধা দেয়া হয়েছে।’
বাজেট পেশ-পরবর্তী এই পর্যালোচনা বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি)।
শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেকশোরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ পর্যালোচনা উপস্থাপন করে সিপিডি। সংস্থার সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য সিপিডির বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
আরও পড়ুন>> বাজেট : শিক্ষাখাতে ভালো কিছু আশা করা যাবে না
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে মধ্যবিত্তদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হয়নি। আবার সারচার্জকৃত সম্পদের সীমা বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ, যারা আয় করে তাদের জন্য সুবিধা বা প্রণোদনা দেয়া হয়নি। কিন্তু যারা সম্পদের উপর নির্ভরশীল তাদের সুবিধা দেয়া হয়েছে। কেন দেয়া হয়েছে, আমাদের কাছে এটি বোধগম্য নয়। এটি সরকারের নির্বাচনী চেতনার সঙ্গেও মিলে না।’
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত বাজেটে সারচার্জের এই কৌশলের পাশাপাশি সারচার্জ আরোপের নিম্নসীমা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বর্তমানে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার ওপর নিট সম্পদ থাকলে সারচার্জ প্রদান করতে হয়। সারচার্জ আরোপের এ নিম্নসীমা বৃদ্ধি করে ৩ কোটি টাকায় নির্ধারণের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।
আরও পড়ুন>> সাধ্যের বাইরে ‘বিলাসী’ বাজেট
সিপিডির সম্মানীয় ফেলো বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বর্তমানে সম্পদ কর আইন কার্যকর নেই। সম্পদ করের পরিবর্তে ব্যক্তিশ্রেণির বিত্তশালী করদাতা, তাদের প্রদেয় আয়করের একটি নির্দিষ্ট হারে সারচার্জ দিয়ে থাকেন। গত কয়েক বছর যাবত এ বিধানটি কার্যকর আছে।’
‘আমরা পর্যালোচনা করে দেখেছি, অনেক বিত্তশালী করদাতার বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে। কিন্তু তরা তেমন কোনো আয় প্রদর্শন করেন না। ফলে প্রদেয় আয়কর কম হওয়ায় তাদের তেমন কোনো সারচার্জও প্রদান করতে হয় না। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ৫০ কোটি বা তার অধিক নিট সম্পদ রয়েছে এমন করদাতাদের নিট সম্পদের ওপর দশমিক ১ শতাংশ অথবা প্রদেয় করের ৩০ শতাংশের মধ্যে যেটি বেশি সে পরিমাণ সারচার্জ আরোপের প্রস্তাব করছি।’
আরও পড়ুন>> কৃষি বীমা আর তরুণদের ফান্ড ছাড়া বাজেটের সবই সেকেলে
‘অন্যদিকে প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ করদাতাদের জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যা আগের বছর একই ছিল। কিন্তু বিভিন্ন ব্যবসায়িক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর দাবি করা হয়েছিল’,- উল্লেখ করেন তিনি।
এসআই/এমএএস/জেডএ/এমএস