সারাদেশে ৫০৩টি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় করবে সরকার
২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রাথমিক শিক্ষা খাতে ২৪ হাজার ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন এ অর্থবছরে নতুন করে সারাদেশে ৫০৩টি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হবে। গত বছর প্রাথমিক শিক্ষা খাতে ২০ হাজার ৫২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এবার শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ১৫ দশমিক ২ শতাংশ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা গতবছর ছিল ১১ দশমিক ৪১ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এ যাবতকালে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়ার ফলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় ভর্তি ও লিঙ্গ সাম্য অর্জন উভয় ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য অর্জন হয়েছে। আমাদের সামনে এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ শিক্ষার ভিত্তিমূলে মান উন্নয়ন ও প্রয়োগিক শিক্ষার প্রসার ঘটানো।
তিনি বলেন, মানসম্মত ও সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। গৃহীত ও বাস্তবায়িত এ সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ, উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন প্রণয়ন, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে উপবৃত্তি প্রদান, নতুন জাতীয়করণকৃত ও বিদ্যামন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন করার, বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ও মাল্টিমিডিয়া সরবরাহ, ৫০৩টি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মাণ এবং শিক্ষা সহায়ক বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন।
প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা সম্প্রসারণ ও গুণগতমান বৃদ্ধির জন্য প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) চলমান রয়েছে। দারিদ্র্যের কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয় গমনোপযোগী শিশুর শিক্ষা যাতে ব্যাহত না হয় সে লক্ষ্যে উপবৃত্তি প্রদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
বলা হয়, বিদ্যালয়সমূহের অবকাঠামো নির্মাণ, নিরক্ষরতামুক্ত বাংলাদেশ নিনির্মাণে সারাদেশে মৌলিক স্বাক্ষরতা পরিচালনা এবং আইসিটি ব্যবহারের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রাথমিক শিক্ষার প্রসার ঘটানো হবে। প্রাথমিক পর্যাযের শিক্ষকদের দেশি-বিদেশি যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আধুনিক বিশ্বের সমতুল্য করে তোলা হবে।
প্রাথমিক শিক্ষাখাতের বাজেটে আরও বলা হয়, স্কুল ফিডিং কার্যক্রমে স্থানীয় ব্যক্তিসহ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সম্পৃত্ততা বৃদ্ধি এবং সামগ্রিক কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও সমন্বিতভাবে বাস্তবায়নের জন্য আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরে জাতীয স্কুল ফিডিং নীতি প্রণয়ন করা হবে। শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রাথমিক শিক্ষা শীর্ষক একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় ৫০৩টি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইন্টারআ্যাকটিভ ক্লাসরুম তৈরি, বিদ্যালয় কক্ষ নির্মাণ, চাহিদার ভিত্তিতে বিদ্যালয় মেরামত ও সংস্কার, বিদ্যলয়ে ওয়াশব্লক নির্মাণ ও নলকূপ স্থাপন, শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদান, বিদ্যালয়, অফিস ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে কম্পিউটার ও আইসিটি সামগ্রী সরবরাহ, বিনামূল্যে বই বিতরণ এবং উপবৃত্তি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।
‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শিরোনামে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) বিকেলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট বক্তব্য শুরু করলেও পরে হাল ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অর্থমন্ত্রীর পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাজেট বক্তব্যের সার সংক্ষেপ পড়ে শোনান। বাদবাকি অংশ পঠিত বলে গণ্য হবে বলে ঘোষণা দেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে আ হ ম মুস্তফা কামালের এটি প্রথম বাজেট। এছাড়া দেশের ৪৮ বছরের ইতিহাসে এটি সবচেয়ে বড় বাজেট। প্রস্তাবিত বাজেট পাস হবে আগামী ৩০ জুন। ১ জুলাই থেকে শুরু হবে নতুন অর্থবছর।
এমএইচএম/আরএস/পিআর