ব্যাংকের দখলেই শীর্ষ স্থান
আগের সপ্তাহের ধারাবাহিকাতায় গত সপ্তাহেও দেশের শেয়ারবাজারের প্রাণ হিসেবে পরিচিত ব্যাংক খাত লেনদেনের শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে। এ নিয়ে টানা তিন সপ্তাহ লেনদেনের শীর্ষ স্থান ব্যাংক খাতের দখলে থাকল। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) খাত ভিত্তিকে লেনদেন পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সম্প্রতি শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়ার লক্ষ্যে এক্সপোজারে সংশোধন আনে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন উদ্যোগের ফলেই শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে, যে কারণে এ খাতের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের লেনদেন বেড়েছে- এমনটাই মনে করছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা।
ব্যাংক খাত লেনদেনের শীর্ষ স্থান দখল করায় লেনদেনে কিছুটা হলেও গতি ফিরেছে। গত সপ্তাহে ডিএসইতে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৬৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা, যা গত সপ্তাহের তুলনায় ৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বা ২ দশমিক ৭০ শতাংশ বেশি। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩৫৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
সম্প্রতি ব্যাংকের এক্সপোজারে সংশোধনী এনে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়, বেমেয়াদী মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ ও দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ, যা দৈনন্দিন লেনদেনে প্রভাব ফেলে না তা শেয়ারবাজারের বিনিয়োগ হিসাবে ধরা হবে না। বিদ্যমান নিয়মে ব্যাংকগুলো আদায়কৃত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম হিসেবে রক্ষিত স্থিতি, সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও রিটেইন্ড আর্নিংসের ২৫ শতাংশ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারে। আর সমন্বিত পদ্ধতিতে ব্যাংক ও তার সাবসিডিয়ারি মিলে বিনিয়োগ করতে পারে ৫০ শতাংশ।
এই বিনিয়োগ হিসাবের ক্ষেত্রে ব্যাংকের ধারণ করা সব ধরনের শেয়ার, ডিবেঞ্চার, কর্পোরেট বন্ড, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট ও অন্যান্য পুঁজিবাজার নিদের্শনাপত্রের বাজারমূল্যের হিসাব করা হয়। সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের গ্রাহককে দেয়া মার্জিন ঋণের স্থিতি, ভবিষ্যৎ মূলধন প্রবাহ বা শেয়ার ইস্যুর বিপরীতে বিভিন্ন কোম্পানিকে দেয়া ব্রিজ ঋণ ও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে গঠিত তহবিলের চাঁদাও এ হিসাবের মধ্যে আগে ধরা হতো।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত সপ্তাহজুড়ে শীর্ষে থাকা ব্যাংক খাতের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৯৫ কোটি ৫৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৭ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা বীমা খাতের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৮৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ১৯৪ কোটি ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে প্রকৌশল খাত।
লেনদেন হওয়া অন্য খাতগুলোর মধ্যে- ওষুধ ও রসায়ন খাতে ১৭৪ কোটি ৭১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ১৬০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, বিবিধ খাতে ৯০ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, বস্ত্র খাতের ১০৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা, আর্থিক খাতে ১১৩ কোটি ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, খাদ্য খাতে ৭৪ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এমএএস/জেএইচ/আরআইপি