বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়ছে
আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এবারের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় সুবিধাভোগীর সংখ্যা ১৩ লাখ বাড়িয়ে ৮৭ লাখে উন্নীত করতে চায় সরকার। এ জন্য গত বাজেটের তুলনায় আগামী বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে। তবে বরাদ্দ ও সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি এ সুবিধা পেতে বাজেটের যথাযথ ব্যবহারের তাগিদ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আসন্ন বাজেটে সুবিধাভোগীর সংখ্যা ১৩ লাখ বাড়িয়ে ৮৭ লাখে উন্নীত করা হবে। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তা খাতের আওতায় প্রতি পরিবারের একজনকে চাকরি দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। সামাজিক সুরক্ষা খাত অগ্রাধিকার পাবে। নতুন করে ১৩ লাখ দরিদ্র মানুষকে এই সামাজিক সুরক্ষার আওতায় আনা হবে। বর্তমান বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সাড়ে ৭৪ লাখ মানুষ বিভিন্ন ভাতা পান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অনুযায়ী, এবারের বাজেটে যোগ্য সব প্রতিবন্ধীকে সামাজিক বেষ্টনীর আওতায় আনা হচ্ছে। একই সঙ্গে তাদের মাসিক ভাতা ও পরিবারের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষাবৃত্তির টাকা বাড়ানো হচ্ছে। বাড়ছে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি ভাতা। এছাড়া সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় কর্মংসংস্থান বাড়ানো হবে। ইতোমধ্যে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, তাদের ভাতার আওতা থেকে ক্রমান্বয়ে বের করে আনতে হবে। এ জন্য আয় বৃদ্ধিমূলক কর্মকাণ্ডের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।
গরিব রোগীদের নগদ সহায়তা বাড়বে
বাজেটে গরিব রোগীদের জন্য নগদ সহায়তা বাড়ানো হবে। ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোক ও প্যারালাইসিসে আক্রান্ত গরিব রোগীদের এককালীন নগদ সহায়তা দেয় সরকার। এর পরিমাণ রোগীপ্রতি ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে ১৫ হাজার রোগী আর্থিক সুবিধা পাচ্ছেন। আসন্ন বাজেটে এই সংখ্যা দ্বিগুণ করা হচ্ছে। এছাড়া বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠী এবং তাদের ছেলে-মেয়েরা মাসিক ভাতাসহ নানা সুবিধা পাচ্ছে। বর্তমানে ৬৪ হাজার এই সুবিধা ভোগ করছে। নতুন বাজেটে এই সংখ্যা ৮১ হাজারে উন্নীত করা পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।
গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক সুরক্ষার বিভিন্ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ ছিল ৫৪ হাজার ২০৬ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে তা হয় ৬৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে এ বরাদ্দের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। এখন দেশে প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতাসহ প্রায় ১৪৫টি সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি আছে। দেশে যেসব সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি আছে তাতে একে অপরকে ছাড়িয়ে যাওয়া, টানাটানি, সমন্বয়হীনতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবের অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে যে বাজেট রয়েছে তা ঠিকমতো ব্যবহার হচ্ছে কি না, সেটা নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। এজন্য দরকার যথাযথ তদারকি ও সমন্বয়। যে সম্পদ রয়েছে সেটারও সঠিক ব্যবহার না হওয়ায় আমাদের অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।
এমইউএইচ/এমএসএইচ/জেআইএম