টানা পতনের পর ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার
টানা চার কার্যদিবস দরপতনের পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সব কয়টি মূল্য সূচক বেড়েছে। তবে ডিএসইর লেনদেন ২০০ কোটি টাকার ঘরেই আটকে আছে।
শেয়ারবাজারে এমন মন্দা দেখা দিলেও সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে শেয়ারবাজারের সমস্য সমাধানে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এতে ননামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ (বিএসইসি) এবং বাংলাদেশ ব্যাংক।
পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকের এক্সপোজার সংশোধনীর ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) দেয়া হচ্ছে ৮৫৬ কোটি টাকার তহবিল।
শেয়ারবাজার থেকে যাতে টাকা বের হয়ে না যায়, সে জন্য বন্ধ করা হয়েছে প্লেসমেন্ট। নতুন করে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) আবেদন না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। একই সঙ্গে কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালক এবং প্লেসমেন্টধারীদের শেয়ার বিক্রির ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
শেয়ারবাজারে গতি ফেরাতে এমন নানামুখী উদ্যোগ নেয়ার পরও চলতি সপ্তাহের প্রথম চার কার্যদিবসেই দরপতন হয়েছে। টানা চার কার্যদিবস পতনের পর বৃহস্পতিবার কিছুটা ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে।
এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২৩০ পয়েন্টে উঠে এসেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৯৭ পয়েন্টে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮১৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
মূল্য সূচকের এ উত্থানের দিনে ডিএসইতে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে, বেড়েছে তার দ্বিগুণের বেশি। দিনভর বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৯টির এবং দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৫১টির।
মূল্য সূচক ও সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেন খরা অব্যাহত রয়েছে। তবে লেনদেনের পরিমাণ আগের দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৯০ কোটি ৬৮ লাখ টাকার। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৫৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৩৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
বাজারটিতে টাকার পরিমাণে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকার লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে ফরচুন সুজের এবং ১০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা লেনদেনে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে আইএফআইসি ব্যাংক।
এ ছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- পাওয়ার গ্রিড, বিকন ফার্মা, এক্সিম ব্যাংক, ইউনাইটেড পাওয়ার ব্যাংক, প্রিমিয়ার ব্যাংক, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন এবং মুন্নু সিরামিক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএসসিএক্স ৫৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৬৮৭ পয়েন্টে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১২ কোটি ৯৫ লাখ টাকার। লেনদেন অংশ নেয়া ২১২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১১৬টির, কমেছে ৬৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩২টির।
এমএএস/এনডিএস/এমকেএইচ