ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

এসিআইয়ের উত্তর ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলছে ডিএসই

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:৪১ পিএম, ১২ মে ২০১৯

বছরের পর বছর ধরে রিজার্ভ থেকে সাবসিডিয়ারি (সহযোগী) কোম্পানির লোকসান বহনের বিষয়ে এসিআই লিমিটেডের ব্যাখ্যা অগ্রহণযোগ্য, বলছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) গঠিত তদন্ত কমিটি।

তবে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কী ধরনের পদপক্ষে নেয়া যেতে পারে সে সংক্রান্ত সুপারিশ এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি। সুপারিশ চূড়ান্ত করতে কমিটি আরও এক সপ্তাহ সময় নিয়েছে।

রোববার ডিএসই প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত তদন্ত কমিটির বৈঠকের মাধ্যমে অতিরিক্ত এ সময় নেয়া হয়। বৈঠক শেষে ডিএসইর তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্য বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, এসিআই লিমিটেড তদন্ত কমিটির প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছে যে, বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডাররা যত লোকসানই হোক এসিআই লজিস্টিক লিমিটেড (স্বপ্ন) চালিয়ে যেতে বলেছে এবং দেশব্যাপী শাখা বিস্তার করতে বলেছে। এ ব্যাখ্যা অগ্রহণযোগ্য ও অবিশ্বাসযোগ্য।

সূত্রটি আরও জানায়, আজ তদন্ত কমিটির বৈঠকের মাধ্যমে সুপারিশ চূড়ান্ত করার কথা ছিল। তবে সার্বিক বিষয় আরও খতিয়ে দেখা দরকার। এজন্য সুপারিশ চূড়ান্ত করতে আরও এক সপ্তাহ সময় নেয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে সুপারিশ চূড়ান্ত করে ডিএসইর বোর্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে পাঠানো হবে। সেখানে স্বপ্নকে বন্ধের সুপারিশ থাকবে। লোকসানি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি বন্ধ করে দেয়ার ক্ষমতা বিএসইসি রাখে।

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানি এসিআই লিমিটেডের গত কয়েক বছরের আর্থিক বিবরণীর তথ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে গত ফেব্রুয়ারিতে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ এ তদন্ত কমিটি গঠন করে।

ডিএসই পরিচালক ও সাবেক চেয়ারম্যান ছিদ্দিকুর রহমান মিয়াকে প্রধান করে গঠিত ওই কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন ডিএসইর পরিচালক ও সাবেক সভাপতি মো. রকিবুর রহমান, পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, স্বতন্ত্র পরিচালক মনোয়ারা হাকিম আলী, প্রফেসর ড. মো. মাসুদুর রহমান ও ডিএসইর প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) আবদুল মতিন পাটোয়ারী।

বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসইর পরিচালক ও তদন্ত কমিটির সদস্য মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, এসিআই সংক্রান্ত বেশকিছু অভিযোগ অনেক দিন ধরে বাজারে আসছে। দীর্ঘদিন ক্রমবর্ধমান হারে লোকসান বাড়ছে। এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এক প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে ওই বিনিয়োগকারী উল্লেখ করেছেন যে, এসিআই যে লোকসান দেখাচ্ছে তা গ্রহণযোগ্য নয়।

এসিআইয়ের লোকসান আপনার কীভাবে দেখছেন- এমন প্রশ্ন করা হলে ইমন বলেন, একটি কোম্পানি অধিকতর লাভের আশায় সাবসিডিয়ারি কোম্পানি করে। একটি নতুন কোম্পানি করলে সাময়িকভাবে সেখানে লোকসান হতে পারে। কিন্তু এটা যদি একসময় মূল কোম্পানিকেই খেয়ে ফেলে, তাহলে মূল কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা কোথায় যাবে? এ বিষয়ে আমরা এসিআইয়ের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছি, তারাও ব্যাখ্যা দিয়েছে।

এসিআইয়ের ব্যাখ্যায় আপনারা সন্তুষ্ট কিনা- জবাবে তিনি বলেন, সাবসিডিয়ারি কোম্পানির লোকসান টানতে গিয়ে মূল কোম্পানি লোকসান করছে। কীভাবে মূল কোম্পানি এ লোকসান কাভার করে মুনাফায় ফিরবে? আমরা এটি জানতে চেয়েছিলাম। উত্তরে এসিআই বলেছে, এজিএমের মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডাররা তাদের ‘স্বপ্ন’ চালিয়ে নিয়ে যেতে বলেছেন, যতদিন লোকসান হয় হোক। আমরা মনে করি, এসিআইয়ের ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য নয়। এটা কোনো স্বাভাবিক লোকসান নয়।

তাহলে তদন্ত কমিটির সুপারিশ কী হবে- এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমরা এখনও চূড়ান্ত সুপারিশ করার মতো জায়গায় যায়নি। তবে সাবসিডিয়ারি কোম্পানির লোকসানের জন্য যদি মূল কোম্পানি থেকে টাকা নিয়ে মূল কোম্পানিকেই মেরে ফেলা হয় তা হবে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য অমানবিক ও অযৌক্তিক। আপনি লোকসান করে মূল কোম্পানি মেরে ফেলবেন, তা তো হতে পারে না।

‘স্বপ্ন’ বন্ধের সুপারিশ তদন্ত কমিটি করতে পারে কিনা এবং বিএসইসি লোকসানি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে পারে কিনা- এর জবাবে ডিএসইর এ পরিচালক বলেন, তদন্ত কমিটি শতভাগ এমন সুপারিশ করতে পারে। আমাদের সব সুপারিশ বিএসইসির কাছে তুলে ধরা হবে। আর বিএসইসি তালিকাভুক্ত যেকোনো কোম্পানির সাবসিডিয়ারি শতভাগ বন্ধ করে দেয়ার ক্ষমতা রাখে।

একই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তদন্ত কমিটির অপর সদস্য ও ডিএসইর পরিচালক মো. রকিবুর রহমান বলেন, একটি ভালো কোম্পানি, ১০ বছর আগে তার রিজার্ভ ছিল দুই হাজার কোটি টাকা। সে একটি সাবসিডিয়ারি করেছে, কোনো সমস্য নাই। সাবসিডিয়ারি করেছে আরও লাভ করার জন্য। এক বছর, দুই বছর, তিন বছর লোকসান হওয়ার পর আপনার কি অধিকার আছে সেটা চালিয়ে যাওয়ার? কে দিয়েছে আপনাকে এই অধিকার? স্বপ্ন তিন-চার বছর লোকসান করার পরও এটা কীভাবে চালানো হচ্ছে? কার টাকা দিয়ে চালানো হচ্ছে? মূলত মূল কোম্পানির রিজার্ভ থেকে টাকা অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।

এমএএস/এমএআর/জেআইএম

আরও পড়ুন