ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

দরপতন অব্যাহত, বিএসইসির চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:৪৬ পিএম, ১৬ এপ্রিল ২০১৯

টানা দরপতন অব্যাহত রয়েছে দেশের শেয়ারবাজার। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবারও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে।

এই দরপতনের প্রতিবাদে ডিএসইর সামনে বিক্ষোভ করে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেনের পদত্যাগ দাবি করেছেন।

টানা দরপতনের পাশাপাশি শেয়ারবাজারে দেখা দিয়েছে লেনদেনে খরা। ডিএসইর লেনদেনের পরিমাণ আটকে গেছে দু’শ কোটি টাকার ঘরে। শেষ চার কার্যদিবসে লেনদেনের পরিমাণ তিন’শ কোটি টাকার ঘর স্পর্শ করতে পারল না।

শেয়ারবাজারের এমন দূরবস্থার কারণে একটু একটু করে পুঁজি হারাচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক ও চরম আস্থাহীনতা। পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি দফায় দফায় বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করলেও দরপতন ঠেকানো যাচ্ছে না।

মঙ্গলবার দুই বাজারেই লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দরপতন হয়েছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৫৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২৫৩টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩২টির দাম।

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৬০ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ২৪৮ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুটি সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ২৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৭৬ পয়েন্টে এবং ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২১২ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

মূল্যসূচকের এই পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৬৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৯৬ কোটি ২ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কেমেছে ২৬ কোটি ১১ লাখ টাকা।

লেনদেন ও সূচকের এমন পতনের প্রতিবাদে দুপুরের দিকে ব্রোকারেজ হাউজ ছেড়ে ডিএসইর সামনে অবস্থান নেয় সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। সেখানে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

ওই বিক্ষোভ ও মানববন্ধন থেকে সংগঠনটির সভাপতি মিজানুর রশীদ চৌধুরী বলেন, 'ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজারের জন্য এখন বিনিয়োগকারীদের আস্থা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আর এই আস্থা ফিরে আসবে একমাত্র খায়রুল হোসেন পদত্যাগ করলে। যে পর্যন্ত শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান হিসেবে একজন নীতিবান বিনিয়োগবান্ধব মানুষ দায়িত্ব না নেবে, সে পর্যন্ত সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরবে না, তাদের নীরব কান্না শেষ হবে না।'

তিনি বলেন, শেয়ারবাজারকে তার অভীষ্ট লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খায়রুল হোসেনকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি'র চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সেই দায়িত্বের অবহেলা করে নিজের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য ইস্যুয়ার কোম্পানির দালালী করছেন। যার প্রভাবে পুরো বাজার আজ ধ্বংসের মুখে।

লেনদেন খরার মধ্যে মঙ্গলবার টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে মুন্নু সিরামিকের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এরপরেই রয়েছে ফরচুন সুজ। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকার। ১০ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে এরপরেই রয়েছে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলস।

লেনদেনে এরপর রয়েছে- রেকিট বেনকিজার, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল, গ্রামীণফোন, এস্কয়ার নিট, ব্র্যাক ব্যাংক, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ এবং মুন্নু জুট স্টাফলার্স।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স ১১৫ পয়েন্ট কমে ৯ হাজার ৭৪৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২১৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৯টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৩০টির।

এমএএস/জেএইচ/জেআইএম

আরও পড়ুন