দরপতন অব্যাহত, রাস্তায় বিনিয়োগকারীরা
দরপতন অব্যাহত রয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় সোমবারও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচকের বড় পতন হয়েছে। দরপতনের প্রতিবাদে মতিঝিলের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
মূল্য সূচকের বড় পতনের পাশাপাশি ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সব খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমছে। ফলে ডিএসইতে পতনের খাতায় নাম লিখিয়েছে ২৭৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম বেড়েছে মাত্র ৪৫টির। ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিন লেনদেনের শুরু থেকেই সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যায়। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে পতনের মাত্রা। একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দরপতনের কারণে লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের কার্যদিবসের তুলনায় ৬১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩৭২ পয়েন্টে নেমে যায়।
একের পর এক কোম্পানির দরপতনের কারণে পতনের হাত থেকে রক্ষা পায়নি ডিএসইর বাছাই করা ৩০টি কোম্পানিও। ফলে এই ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকটি আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯২৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৪০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এমন বড় দরপতনের কারণে দুপুরের দিকে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের একটি দল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সামনের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন। দরপতনের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ডিএসইর কর্মকর্তাদের দায়ী করেন তারা।
বিক্ষোভ থেকে বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করে বলেন, কারসাজি চক্রের খপ্পড়ে পড়ে শেয়ারবাজারে টানা দরপতন হচ্ছে। এতে একটু একটু করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পুঁজি শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পতন ঠেকাতে বিএসইসি বা ডিএসই কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সবাই যার বার সুবিধা আদায়ের চেষ্টা চালাচ্ছে।
এদিকে মূল্য সূচক ও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমার দিন ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪১৮ কোটি টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৩০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৮৭ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে এদিন ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের শেয়ার। কোম্পানিটির ৫৭ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর পরই রয়েছে গ্রামীণফোন। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৬৬ লাখ টাকার। ১৭ কোটি ৩৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে এর পরই রয়েছে ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- ফরচুন সুজ, ইস্টার্ন ক্যাবলস, মুন্নু সিরামিক, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল, ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএসসিএক্স ১১২ পয়েন্ট কমে ৯ হাজার ৯৭৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২৪১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮০টির। দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির।
এমএএস/এসএইচএস/জেআইএম