চলছে বিজিএমইএর ভোট : দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচনের ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই পক্ষ। একদিকে বুথ থেকে এজেন্টকে বের করে দিয়ে তাদের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্বাধীনতা পরিষদের প্যানেল লিডার জাহাঙ্গীর আলম। অন্যদিকে নির্বাচনের প্রার্থীকে ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট হিসেবে রাখা হয়েছে বলে অপরপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের লিডার রুবানা হক।
শনিবার (৬ এপ্রিল) বিজিএমইএর পুরনো ভবন কারওয়ান বাজারের নুরুল কাদের অডিটোরিয়ামে সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিজিএমইএ ভবনে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
নির্বাচন প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা দুইজন এজেন্ট দিয়েছিলাম। কিন্তু এজেন্ট বের করে দেয়া হয়েছে। এখন কেন্দ্রে আমার কোনো এজেন্ট নেই। প্রার্থীরা এজেন্ট হওয়ায় তাদের বের করে দেয়া হয়। এছাড়া এক এজেন্টকে বিজিএমইএ ভবনের উপরে নিয়ে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনকে ইতোমধ্যে জানিয়েছি। এখনও আশাবাদী, যদি আমাদের এজেন্ট ভোটকেন্দ্রে থাকতে পারে এবং ভোটাররা ভোট দেয়ার সুযোগ পায় তাহলে আমাদের প্যানেল অবশ্যই বিজয়ী হবে।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সম্মিলিত ফোরামের প্যানেল লিডার রুবানা হক বলেন, এজেন্ট না দিয়ে তারা প্রার্থীকে ভোটকেন্দ্রে রাখতে চান। প্রার্থীরা এজেন্ট হতে পারবে না; এটাই তো নিয়ম। এটা কমিশনের বিষয়। এছাড়া নির্বাচনে কাউকে কোনো ধরনের ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে না।
রুবানা হক বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত একটি শুভ মুহূর্ত। আমরা সবাই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করছি, এটা অনেক বড় কথা। নির্বাচনের ফল যাই হোক তা সানন্দে গ্রহণ করব। নির্বাচিত হলে ছোটবড় সব পোশাক কারখানার উন্নয়নে কাজ করব।
বিজিএমইএর নির্বাচনী বোর্ডের দায়িত্বে থাকা কমিশনার ও মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির বলেন, ভোট আনন্দঘন পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ভোটাররা উৎসবের আমেজে ভোট প্রদান করছে। কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আশা করি সব ঠিক থাকলে ভোটগ্রহণ শেষে কম সময়ের মধ্যেই আমরা ফলাফল দিতে পারব।
দুই বছর মেয়াদি এই নির্বাচনে পরিচালনা পর্ষদের ৩৫টি পরিচালক পদে ৪৪ জন প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। তবে এর মধ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৯ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ২৬ পদে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। এর মধ্যে প্রার্থী সম্মিলিত পরিষদের ও ফোরামের ২৬ জন, স্বাধীনতা পরিষদের ১৮ জন। সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক। তিনি প্রয়াত ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আনিসুল হকের সহধর্মিণী। অন্যদিকে স্বাধীনতা পরিষদের প্যানেল লিডার ডিজাইন অ্যান্ড সোর্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম।
সম্মিলিত পরিষদ-ফোরামের প্রার্থীরা হলেন- রুবানা হক, এস এম মান্নান, ফয়সাল সামাদ, মোহাম্মদ নাছির, আসিফ ইব্রাহিম, আরশাদ জামাল, এম এ রহিম, কে এম রফিকুল ইসলাম, মো. শহীদুল হক, মশিউল আজম, ইনামুল হক খান, মাসুদ কাদের, ইকবাল হামিদ কোরাইশী, নাছির উদ্দিন, কামাল উদ্দিন, সাজ্জাদুর রহমান মৃধা, রেজওয়ান সেলিম, মুনির হোসেন, এ কে এম বদিউল আলম, মিরান আলী, মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, মোশারফ হোসেন ঢালী, শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, মহিউদ্দিন রুবেল।
এছাড়া রয়েছেন শরীফ জহির ও নজরুল ইসলাম। এ যৌথ প্যানেলের চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ীরা হলেন- মোহাম্মদ আব্দুস সালাম, এ এম চৌধুরী, এ এম মাহবুব চৌধুরী, এনামুল আজিজ চৌধুরী, মোহাম্মদ আতিক, খন্দকার বেলায়েত হোসেন, অঞ্জন শেখর দাশ, মোহাম্মদ মুছা ও মোহাম্মদ মেরাজ-ই-মোস্তফা।
অন্যদিকে স্বাধীনতা পরিষদের প্রার্থীরা হলেন- জাহাঙ্গীর আলম, দেলোয়ার হোসেন, হুমায়ুন রশিদ, রফিক হাসান, সাইফুল ইসলাম, শওকত হোসেন, খন্দকার ফরিদুল আকবর, জাহাঙ্গীর কবির, জাহিদ হাসান, শরিফুল আলম চৌধুরী, কাজী আবদুস সোবহান, জহিরুল ইসলাম, কাজী মাহযাবিন মমতাজ, মাহমুদ হোসাইন, হোসেন সাব্বির মাহমুদ, আয়েশা আক্তার, মো. ওয়ালীউল্লাহ এবং ওমর নাজিম হেকমত।
এসআই/বিএ/জেআইএম