ডিএসইর সঙ্গে কলম্বো স্টক এক্সচেঞ্জের সমঝোতা সই
পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও কলম্বো স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান ও সিএসইর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাজীভা বন্দরনায়েক স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সই করেছেন।
গত ২৮ মার্চ কলম্বোতে এই সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে বলে বুধবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ তথ্য বিনিময় করবে। বিশেষ করে পণ্য উন্নয়ন, সক্ষমতা বৃদ্ধি ও মূলধন বৃদ্ধির বিষয়ে সম্প্রসারণে কাজ করবে। এছাড়া দুই দেশের অর্থনীতি ও বাণিজ্যিক সর্ম্পক উন্নয়ন কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে কেএএম মাজেদুর রহমান বলেন, ডিএসই দেশের এবং বিদেশে অবস্থানরত বিনিয়োগকারীদের লেনদেনের জন্য আদর্শ জায়গা। এখানে আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। যা বিশ্বখ্যাত নাসডাক থেকে নেয়া। এছাড়া বিশ্বখ্যাত শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জ কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে এরই মধ্যে ডিএসইর অংশীদার হয়েছে।
এ সময় চুক্তির মাধ্যমে সিএসই ও ডিএসইর সহযোগিতায় উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ দক্ষিণ এশিয়ায় নেতৃত্ব দেবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন মাজেদুর রহমান।
রাজীভা বন্দরনায়েক বলেন, ডিএসইর সঙ্গে সহযোগিতার চুক্তি করতে পেরে আমরা আনন্দিত। কয়েক বছর ধরে এশিয়ার বিভিন্ন স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে এমন সহযোগিতার চুক্তির চেষ্টা করছি। বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায়। এই দক্ষিণ এশিয়া উদীয়মান অর্থনীতির শক্তি। যেখানে আমাদের শেয়ারবাজার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তাই আমরা শেয়ারবাজারের উন্নয়নে ডিএসইর সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে কাজ করতে চাই।
এর আগে ২৭ মার্চ ডিএসইর তিন সদস্যের এক প্রতিনিধি দল শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে `High level engagement with Listed companies : Sustainability Reporting for Sustainable Development’ প্রোগ্রাম এ অংশগ্রহণ করেন। প্রতিনিধি দলে ছিলেন ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান এবং সহকারী মহাব্যবস্থাপক মনিরুজ্জামান।
প্রতিনিধি দল ২৮ মার্চ ‘টেকসই উন্নয়নে টেকসই প্রতিবেদন’ শিরোনামে এক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। যেখানে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধি, স্টক এক্সচেঞ্জ, পেশাদার সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন৷ অনুষ্ঠানে GRI এর প্রধান নির্বাহী টিম মোহিন ‘Evolution of Corporate Reporting : Sustainability and Integration’ এর ওপর মূল প্ৰবন্ধ উপস্থাপন করেন।
এ সময় তিনি বলেন, অনেক কোম্পানি উপলব্দি করতে শুরু করেছে যে, সাসটেনেবল রিপোর্টিং শুধুমাত্র একটি ব্যবসায়িক সুযোগ নয়, এটি একটি ব্যবসায়িক প্রয়োজন। তাদের প্রভাবের উপর প্রতিবেদন স্বচ্ছতার অগ্রগতি সাধন করে, যা ঝুঁকির বিষয়ে পূর্বাভাস প্রদান এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে সহায়তা করে।
পরে Guidence Sustainable Reporting for Listed Companies in Bangladesh প্রকাশনা উন্মোচন করে ডিএসই’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান। এ সময় তিনি বলেন, টেকসই প্রবৃদ্ধি এবং সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য পরিবেশগত, সামাজিক ও প্রশাসনিক কারণগুলো কোম্পানি এবং তাদের বিনিয়োগকারীদের ক্ষমতার উপর প্রভাব ফেলে। নিয়ন্ত্রণমূলক দৃষ্টিকোণ থেকে সাসটেনেবল রিপোর্টিং পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ডিএসই একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যার মাধ্যমে তালিকাভুক্ত কোম্পানির অর্থনৈতিক, পরিবেশগত ও সামাজিক প্রভাব এবং সিদ্ধান্ত প্রতিফলিত হবে। ডিএসই বাংলাদেশে কর্পোরেট রিপোর্টিংয়ে সাসটেনিবিলিটি ডিসক্লোজার উন্নয়ন অব্যাহত রাখবে।
সিএসইর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বন্দরনায়েকে বলেন, সিএসই টেকসই যোগাযোগের ক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কার কোম্পানিগুলোর ক্রমবর্ধমান প্রতিশ্রুতিকে উৎসাহিত করছে। শ্রীলঙ্কার কোম্পানিগুলোকে টেকসই প্রতিবেদনে কার্যকর এবং মানসম্মত চর্চা করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত করা হয়। তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য সিএসই’র নির্দেশিকার দ্বিতীয় সংস্করণ হলে ‘কমিউনিকেটিং সাসটেইনেবল প্রসপেক্টিভ অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অব জিআরআই’। যা এই প্রকাশনা ব্যবহারকারীদের জন্য উল্লেখযোগ্য মান উন্নয়নের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এমএএস/জেএইচ/এমকেএইচ