কৌশলগত বিনিয়োগকারী পেতে ব্যর্থ সিএসই চায় কর অব্যাহতি
পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে দফায় দফায় সময় বাড়ানো হলেও ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন অনুযায়ী কৌশলগত বিনিয়োগকারী (স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার) নির্ধারণ করতে পারেনি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। কৌশলগত বিনিয়োগকারী পেতে ব্যর্থ হয়ে প্রতিষ্ঠানটি এখন ‘দ্রুত’ কৌশলগত বিনিয়োগকারী পেতে কর অব্যাহতি সুবিধা চেয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে পাঠানো নতুন অর্থবছরের (২০১৯-২০) বাজেট প্রস্তাবে সিএসই এ দাবি জানিয়েছে। এর পক্ষে যুক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি এনবিআরকে বলেছে, ডিমিউচ্যুায়ালাইজেশন আইন ২০১৩ অনুযায়ী মোট ইস্যু করা শেয়ারের ২৫ শতাংশ কৌশলগত বিনিয়োগকারীর নিকট বিক্রি করতে হবে। সিএসই এখনও আইন অনুযায়ী কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণ করতে পারেনি। কর সুবিধা দ্রুত কৌশলগত বিনিয়োগকারী পেতে সহায়ক হবে এবং ছোট এক্সচেঞ্জ হিসেবে দেশের পুঁজিবাজারে সিএসই যথাযথ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।
ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন স্কিমের শর্ত অনুযায়ী, ব্লকড হিসেবে থাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ৬০ শতাংশ শেয়ার কৌশলগত, প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে বিক্রির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এর মধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জের মোট শেয়ারের ২৫ শতাংশ (সংরক্ষিত শেয়ার থেকে) কৌশলগত বিনিয়োগকারীর কাছে এবং বাকি ৩৫ শতাংশ শেয়ার আইপিও প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে বিক্রি করতে হবে। অন্যদিকে ৪০ শতাংশ শেয়ারের মালিক স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য বা ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান।
স্টক এক্সচেঞ্জ ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইনে ২০১৬ সালের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের কাছে স্টক এক্সচেঞ্জের সংরক্ষিত ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই’র বাধ্যবাধকতা ছিল। কিন্তু ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং সিএসই ওই সময়ের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে চুক্তি করতে ব্যর্থ হয়। ফলে স্টক এক্সচেঞ্জের আবেদনের প্রেক্ষিতে ছয় মাস সময় বাড়ানো হয়। কিন্তু সে দফাতেও ব্যর্থ হয় উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ।
এরপর আরও কয়েক দফা সময় বাড়ায় বিএসইসি। কিন্তু গত বছর ডিএসই কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণ করতে পারলেও ব্যর্থ হয় সিএসই। ফলে আবারও সময় বাড়ানোর আবেদন করে প্রতিষ্ঠানটি। সিএসইর সেই আবেদন গ্রহণ করে এক বছর সময় দেয় বিএসইসি। নতুন নির্ধারিত ওই সময় অনুযায়ী চলতি বছরের ৮ মার্চের মধ্যে সিএসইকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী চূড়ান্ত করার কথা। কিন্তু এ দফাতেও ব্যর্থ হয় প্রতিষ্ঠানটি।
এ বিষয়ে সিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাইফুর রহমান মজুমদার জাগো নিউজকে বলেন, কৌশলগত বিনিয়োগকারীর নির্ধারণ বিএসইসি আমাদের আর এক বছর সময় দিয়েছে। সুতরাং কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণে আমরা ২০২০ সালের ৮ মার্চ পর্যন্ত সময় পাচ্ছি। তবে বিষয়টি এখন প্রকাশ হয়নি।
সিএসইর এমডি সময় বাড়ানোর কথা জানালেও বিএসইসি থেকে এখনো এ সংক্রান্ত কোনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। তবে গত বছর সময় বাড়ানোর বিষয়ে বিএসইসি জানিয়েছিল, সিএসইর আবেদনের প্রেক্ষিতে এক্সচেঞ্জের ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন ২০১৩ এর ১৪(১) ধারার ক্ষমতা বলে কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সঙ্গে চুক্তি করাসহ এ সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করতে প্রতিষ্ঠানটিকে আরও এক বছর সময় দেয়া হয়েছে।
বিএসইসির কাছে গত বছর সময় বাড়ানোর আবেদনে সিএসই বলেছিল, যোগ্য কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণে সিএসই কাজ করছে। ইতোমধ্যে ৪৬টি স্টক এক্সচেঞ্জে ও ৪২টি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে এক বছর সময় বাড়ালেও কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণ করতে পারেনি সিএসই।
এমএএস/আরএস/পিআর