ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

পাট হবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নতুন চালিকাশক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:৪০ পিএম, ১৮ মার্চ ২০১৯

দেশের তৈরি পোশাক শিল্পের পর সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত পাট ও পাটজাত পণ্য। তাই এ খাতের উন্নয়নে দরকার যুগোপযোগী নীতিমালা প্রণয়ন, নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি বহুমুখীকরণ অত্যন্ত জরুরি। এটি নিশ্চিত করতে পারলে পাটই হবে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নতুন চালিকাশক্তি।

সোমবার রাজধানীর মতিঝিলে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) উদ্যোগে আয়োজিত ‘পাট শিল্পের উন্নয়নে এর বহুমুখীকরণ : সম্ভাবনা ও প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সেমিনারে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) প্রধান অতিথি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা চেম্বারের সভাপতি ওসামা তাসীর।

গোলাম দস্তগীর বলেন, বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক পণ্য বর্জনের ফলে আমাদের পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদার নতুন দিগন্ত সূচনা হয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।

তিনি বলেন, পাটের বীজ উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জন এবং পাটপণ্যের বহুমুখীকরণে গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদানে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হবে। স্থানীয় বাজারে পাটপণ্যের চাহিদা বাড়ানো এবং সে অনুযায়ী উৎপাদন কার্যক্রম চালানো জন্য উদ্যোক্তাদের প্রতি আহবান জানান মন্ত্রী।

স্বাগত বক্তব্যে ওসামা তাসীর বলেন, পৃথিবীর প্রায় ৬০টি দেশে বাংলাদেশে উৎপাদিত পাট ও পাটজাত পণ্য ব্যবহৃত হচ্ছে এবং এ ধরনের পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ প্রতিবছর এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা আয় করে থাকে।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশী পাট ও পাটপণ্যের বাজার সম্প্রসারণের জন্য এর বহুমুখীকরণ অত্যন্ত অপরিহার্য। পাট খাতের আধুনিকায়নে নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুফল কিভাবে এ খাতে ব্যবহার করা যায়, তার ওপর গুরুত্বারোপের আহ্বান জানান তিনি।

তিনি জানান, বর্তমানে আমাদের দেশের উদ্যোক্তারা প্রায় ২৩৫ ধরনের পাটপণ্য উৎপাদন করেন এবং প্রায় ৫ মিলিয়ন লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পাট খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। পাট খাতের পুনরুত্থান এবং পাট হতে কাগজ প্রস্তুুতকে উৎসাহিত করার জন্য জুট পাল্প অ্যান্ড পেপার অ্যাক্ট প্রণয়নের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, এ উপমহাদেশে পাটের মাধ্যমেই কৃষিপণ্যের বাণিজ্যিকীকরণ করা হয়েছে। কাল পরিক্রমায় পাট আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নতুন চালিকা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

তিনি বলেন, পাটপণ্য শতভাগ মূল্য সংযোজনের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে থাকে। তিনি বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশি পাটপণ্যের সম্প্রসারণের জন্য ইতিবাচক ব্র্যান্ডিং পরিচালনার ওপর জোর দেন। তিনি এ খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে অতিদ্রুত পাটপণ্যের বহুমুখীকরণ, জুট পেপার অ্যাক্ট, বৈশ্বিক বাজার বিশ্লেষণ এবং পাটকল পরিচালনার ওপর গুরুত্বারোপ করা প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।

মূল প্রবন্ধে ডিসিসিআই পরিচালক মো. রাশেদুল করিম মুন্না বলেন, বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী সারাবিশ্বে পাটপণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে, পাটের উৎপাদন প্রায় ২ থেকে ৩ শতাংশ বেড়েছে। তাই এ খাত উন্নয়নে দেশের পাটখাতের উন্নয়নে গবেষণা পরিচালনা, বিনিয়োগ সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন, মানব সম্পদের দক্ষতা বৃদ্ধি, বিশেষায়িত পাটকল স্থাপন, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের উৎপাদিত পাটপণ্যের ব্র্যান্ডিং বাড়ানো এবং জুট পেপার অ্যাক্ট প্রণয়নের আহ্বান জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই পরিচালক এনামুল হক পাটোয়ারী, হোসেন এ সিকদার, কে এম এন মঞ্জুরুল হক, ইঞ্জিয়ার মো. আল আমিনসহ এ খাতের উদ্যোক্তা ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

এসআই/এমএসএইচ/জেআইএম

আরও পড়ুন