ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

ঋণখেলাপিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় এফবিসিসিআই

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:২৬ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

অবৈধ পন্থায় ব্যাংকের টাকা লুটপাট করা ঋণখেলাপিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই)।

সোমবার এফবিসিসিআই আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সংগঠনটির সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এ কথা বলেন। আসন্ন জাতীয় বাজেট উপলক্ষে অ্যাসোসিয়েশন গ্রুপের সভাপতিদের সঙ্গে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ব্যাংকের সুদের হার অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। প্রধানমন্ত্রীসহ সকলের কাছে বিষয়টি এফবিসিসিআই উপস্থাপন করছে। এটা (সুদহার) কোনোভাবেই ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরির জন্য যথেষ্ট নয়। যে কারণে বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

তিনি বলেন, আমরা যথেষ্ট সোচ্চারভাবে বলতে চেয়েছি দুই ধরনের খেলাপি ঋণ আছে। একটি হলো- যারা অবৈধ পন্থায় ব্যাংকের টাকা লুটপাট করেছেন, আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তবে যারা ব্যবসা করতে গিয়ে লোকসান করেছেন তাদের ক্ষেত্রে শিথিল করা যেতে পারে।

৫০০ কোটি টাকার ওপর ঋণখেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দেয়ার সমালোচনা করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, আমরা বলেছি যদি ঋণখেলাপিদের জন্য ৫০০ কোটি টাকার ওপর আলাদা স্লাপ তৈরি করা হয়, তাদের জন্য যদি ২০ বছরের জন্য ঋণ রিশিডিউল করা হয়, তাহলে আমার ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য কেন করা হচ্ছে না? আমাদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পরিষ্কারভাবে এ বিষয়গুলো আমরা তুলে ধরেছি।

তিনি বলেন, আমরা বলেছি শুধু বিজিএমইএ নয়, সমস্ত সেক্টর (খাত) এগিয়ে আসবে। শুধু আরএমজি বা টেক্সটাইল সেক্টর রফতানির খাত দখল করে থাকুক আমরা তা চাই না। আমরা চাই ফুটওয়্যার, প্রসেস ফুড, আইটি খাত এগিয়ে আসুক।

শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ভ্যাটের যে একটি অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল তার জন্য আমরা আন্দোলন করেছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকার কারণে এটাকে জাতীয় ইস্যুতে পরিণত করেছি। সেই কারণে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি তার নজরে নিয়েছেন এবং তার দূরদৃষ্টির কারণেই ভ্যাট আইন স্থগিত রয়েছে।

সবক্ষেত্রে ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ থাকবে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা গত সপ্তাহে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসেছি। তিনি একটি বিষয় মেনে নিয়েছেন ভ্যাট সবক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ থাকবে না। এটির বিভিন্ন হার হবে।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ২৮ হাজার টাকা প্যাকেজ ভ্যাট। আমার কাছে রিপোর্ট আছে অনেকে এই ২৮ হাজার টাকা না দিয়ে, অসাধু ইন্সপেক্টরদের সঙ্গে হ্যান্ডশেক (হাত মেলানো) করছেন। দয়া করে এগুলো বন্ধ করুন। যেখানে অন্যায় করা হবে, সেখানে এফবিসিসিআই আপনাদের পাশে থাকবে। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব, প্রতিবাদ করব।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে প্রধানমন্ত্রী কতটা গুরুত্ব দেন মন্ত্রিসভা গঠনের মাধ্যমে তিনি তা দেখিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী একটা একটা করে হিসাব করে দেখলে অনেকে জেলাস হন, কষ্ট পান। একজন ব্যবসায়ী যে রাজনীতি করতে পারেন এটা অনেকে বুঝতে পারেন না। রাজনীতি ও অর্থনীতি একে অপরের পরিপূরক। একজন ব্যবসায়ী যদি সততাভাবে ব্যবসা করেন ওটাই হবে সব থেকে বড় সমাজসেবা।

তিনি আরও বলেন, একজন অসৎ ব্যবসায়ী, একজন অনৈতিক মানুষকে আমরা সরকারের উচ্চপর্যায়ে দেখতে চাই না। আমরা দেখতে চাই রাজনীতিতে স্বচ্ছতা ফিরে আসুক। বিজনেস কমিউনিটিতে স্বচ্ছতা ফিরে আসুক। দুই-একজনের ব্ল্যাকশিপের জন্য সমস্ত ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ভুগতে পারে না।

এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের পরিচালনায় বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনের শীর্ষ নেতারা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন। এদের মধ্যে ফিস ফার্ম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি মোল্লা সামছুর রহমান (শাহীন) বলেন, আমরা ৫-৭ শতাংশ সুদহারে ব্যাংকঋণের জন্য যুদ্ধ করছি। পিকেএসএফের দায়িত্ব দারিদ্র্য বিমোচন করা। তাই এফবিসিসিআইয়ের সদস্য সংগঠনগুলোর সদস্যদের পিকেএসএফের ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিতে হবে।

পাইকারি ভোজ্যতেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী মো. আবুল হাসেম বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন ব্যাংকের সুদহার এক অঙ্কে নামবে। কিন্তু আমাদের ১৩ শতাংশ সুদহারে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করতে হচ্ছে। তাই এফবিসিসিআই থেকে ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হোক।

এরপর ফজলে ফাহিম বলেন, সরকারি ব্যাংকগুলো এক অঙ্ক সুদহারে উদ্যোক্তাদের ঋণ দিচ্ছে। কিন্তু বেসরকারি ব্যাংকগুলোর সুদহার এখনো এক অঙ্কে নামেনি। আমরা এটার জন্য কাজ করছি।

এমএএস/বিএ/পিআর

আরও পড়ুন