বাংলাদেশে প্রকল্প বাস্তবায়ন হয় ধীরগতিতে : ভারত ও এডিবি
বাংলাদেশে প্রকল্প বাস্তবায়ন ধীরগতিতে হয় জানিয়ে তা দ্রুতগতিতে করার তাগিদ দিয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার ড. আদরশ সোয়াইকা ও এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ এ কথা বলেন। সাক্ষাৎ শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
ভারত-এডিবির এ কথা সঠিক বলে মনে করেন পরিকল্পনামন্ত্রী। এম এ মান্নানের ধারণা, জবাবদিহি কম থাকাই ধীরগতির কারণ।
এডিবির প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ এসেছিলেন। এ দেশ সম্পর্কে তার ভালো আগ্রহ আছে। গত প্রায় তিন বছর তার কাজ দেখেছি ভালো। তিনি চান, প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ আরও দ্রুত হোক। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও চান দ্রুত হোক। আমিও চাই আরও দ্রুত হোক। ভালো ভালো প্রকল্প আসছে। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নের গতিটা নিয়ে তাদের একটু প্রশ্ন আছে।’
‘আমি এখানে আসার পরে বলেছি, আমার প্রধান কাজই হবে প্রকল্পের গতি বৃদ্ধি করা’, যোগ করেন এম এ মান্নান।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমি তাকে আশ্বস্ত করে বলেছি, আপনি আমার সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে যোগাযোগ রাখবেন। কোন কোন পয়েন্টে অ্যাক্সেক্টলি আপনাদের সহায়তা, গতি বৃদ্ধি প্রয়োজন, সেগুলো আমাকে বলবেন। আমি সাহায্য করব।’
‘ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে দুই ঘণ্টায় যাওয়া সম্ভব। এটা বাস্তবায়ন করার প্রস্তাব দিয়েছেন মনমোহন প্রকাশ’ উল্লেখ করে এম এ মান্নান বলেন, ‘আরও দ্রুত গতিতে রেল করা যায়। তাদের ধারণা, আমরা যে ঢাকা-চট্টগ্রাম আট নাকি ছয় ঘণ্টায় যাই, এটাকে দুই ঘণ্টায় নামানো সম্ভব। এমনকি বর্তমান যে রেলের ট্র্যাক আছে, সেটার ওপর দিয়েই নাকি সম্ভব। আমার অতটা পরিষ্কার ধারণা ছিল না। তাদের কাছে নাকি স্টাডি আছে। আমি বলেছি, খোঁজ-খবর নেব।’
ভারতীয় হাইকমিশনারের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ভারতীয় হাইকমিশনার নাই এ মুহূর্তে। ভারপ্রাপ্ত যিনি আছেন, তিনি এসেছিলেন। উনিও মনে করেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে বোধহয় গতি বৃদ্ধির একটা ব্যাপার আছে। যদিও তাদের ওখানেও গতি বৃদ্ধি নেই। মোটামুটি সমস্যা প্রায় কাছাকাছি। আমি তাকে আশ্বস্ত করেছি, অনানুষ্ঠানিকভাবে সমস্যাগুলো জানাবেন।’
এরকম পরিপ্রেক্ষিতে এক সাংবাদিক জানতে চান, ‘সবাই চায় কাজ দ্রুত গতিতে হোক, তাহলে সমস্যা কোথায়?’
জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি, আমলাতন্ত্র শুধু ব্যক্তি নয়। আইন-কানুনও কিন্তু আমলাতন্ত্র। ব্যক্তিগুলো আইনের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। অনেকগুলো বিধিবিধান আমাদের সিস্টেমে আছে, যেগুলো আমি ব্যক্তিগতভাবে পুরনো। আমি বললে তো কাটা যাবে না, কী প্রভাব পড়ল দেখতে হবে। এ জন্য কয়েকটা স্তর কেটে ফেলা। যেমন, চারস্তরের জায়গায় তিন স্তর করে ফেলা। পাঁচের জায়গায় তিন করা। এগুলো করলে গতি বৃদ্ধি পাবে।’
‘আর দিনের কাজ দিনে না করা বা তিন দিনে যেটা হওয়ার কথা, সেখানে আটদিন লাগানো। জবাবদিহির প্রশ্ন একটা আছে। এটা বোধহয় আমাদের এখানে একটু কম আছে। এটা বৃদ্ধির জন্য আমাদের সরকার প্রধান বারবার বলছেন। আমরা আশা করছি, গতি বৃদ্ধি পাবে। কিছু গতি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এতে আমি সন্তুষ্ট নই’,- যোগ করেন এম এ মান্নান।
পিডি/জেডএ/এমকেএইচ