অ্যাক্রেডিটেশন সনদ পেল ‘প্রাণ বেভারেজ ল্যাবরেটরি’
বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন বোর্ডের (বিএবি) সনদ পেল দেশের বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ গ্রুপ-এর ‘প্রাণ বেভারেজ ল্যাবরেটরি’।
বৃহস্পতিবার শিল্প মন্ত্রণালয়ে প্রাণ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইলিয়াছ মৃধার হাতে অ্যাক্রেডিটেশন সনদ তুলে দেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। এ সময় শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, ভারপ্রাপ্ত শিল্পসচিব মো. আবদুল হালিম ও বিএবির মহাপরিচালক মো. মনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে দেশীয় ও বহুজাতিক ১৬টি টেস্টিং ল্যাবরেটরি ও ইন্সপেকশন প্রতিষ্ঠানকে বিএবি সনদ প্রদান করা হয়।
বেসরকারি শিল্পল্যাব ক্যাটাগরির প্রাণ ডেইরি লিমিটেড-এর প্রতিষ্ঠান প্রাণ বেভারেজ ল্যাবরেটরি এই অ্যাক্রেডিটেশন সনদ পেয়েছে।
এ ছাড়া অ্যাক্রেডিটেশন সনদপ্রাপ্ত দেশি ও বিদেশি ল্যাবরেটরি ও ইন্সপেকশন প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বিএসটিআইয়ের ন্যাশনাল মেট্রোলজি ল্যাবরেটরি, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন বিডি টেস্টিং ল্যাবরেটরি (পদ্মা সেতুর মান নিয়ন্ত্রণকারী ল্যাব), বিমান বাংলাদেশের ক্যালিব্রেশন ল্যাবরেটরি, ল্যাব এইডের প্যাথলজি ল্যাবরেটরি, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ড্রাস্ট্রিজের নাসডাট ইউটিএস, তাহা জিয়াম, পরিদর্শন সংস্থার ব্যুরো ভেরিতাস কনজুমার প্রোডাক্ট সার্ভিসেস (বাংলাদেশ) লি., ইউনাইটেড হসপিটালের প্যাথলজি ল্যাবরেটরি, এসজিএস বাংলাদেশ লিমিটেডের ক্যালিব্রেশন ল্যাবরেটরি, পরিদর্শন সংস্থার আইটিএস বাংলাদেশ লি., ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের ন্যাশনাল কন্ট্রোল ল্যাবরেটরি, মৎস্য অধিদফতরের ফিস ইন্সপেকশন অ্যান্ড কোয়ালিটি কন্ট্রোল (এফআইকিউসি) ঢাকা ল্যাবরেটরি, এনালাইটিকেল কেমিস্ট্রি ল্যাবরেটরি, বাংলাদেশ মেটেরিয়াল টেস্টিং ল্যাবরেটরি ও বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যান্ড টেস্টিং ল্যাবরেটরি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাজারে পণ্য ও সেবা আমদানি কিংবা রফতানির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের কারিগরি ও অশুল্ক প্রতিবন্ধকতা আরোপ করা হয়ে থাকে। এসব প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে বিশ্বব্যাপী একটি স্বীকৃত ও গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা হলো অ্যাক্রেডিটেশন। কোনো পণ্য অ্যাক্রেডিটেড ল্যাবরেটরির সনদপ্রাপ্ত হলে তা বিশ্বব্যাপী অনায়াসে গ্রহণযোগ্য হয়। যেকোনো দেশে বিনা বাধায় সে পণ্য বাজারজাত করা সম্ভব হয়।
এ বাস্তবতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশে মানসম্পন্ন পণ্য ও সেবা উৎপাদনের লক্ষ্যে অ্যাক্রেডিটেশন কার্যক্রম জোরদারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় মান অবকাঠামোর আধুনিকায়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
নতুন এসব ল্যাবরেটরি ও ইন্সপেকশন প্রতিষ্ঠান অ্যাক্রেডিটেশন সনদের মানে উন্নীত হওয়ায় দেশে গুণগত শিল্পায়নের ধারা বেগবান হবে। এর মাধ্যমে সরকারের ইশতেহারে ঘোষিত রফতানি পণ্য বহুমুখীকরণ, শ্রমঘন এসএমই খাতের বিকাশ, ভারী ও মৌলিক শিল্পকেন্দ্রিক বহুমাত্রিক সংযোজন শিল্প স্থাপন, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতের প্রসার, স্থানীয় কাঁচামাল নির্ভর ক্লাস্টার ইন্ডাস্ট্রি স্থাপনের মতো লক্ষ্য অর্জন সহজ হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও গুণগত শিল্পায়নে দেশীয় শিল্প উদ্যোক্তাদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। তাদের প্রচেষ্টায় বিশ্ববাজারের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশি পণ্য সুনামের সঙ্গে টিকে আছে। তিনি পণ্যের গুণগত মনোন্নয়নের প্রয়াস অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
বর্তমান সরকার শিল্প ও ব্যবসাবান্ধব সরকার উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, টেকসই শিল্পায়ন ও ব্যবসার প্রসারে সরকারের সহায়তা অব্যাহত থাকবে। এ সময় তিনি ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের জাতীয় অর্থনীতির প্রাণশক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেন। প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাজারের আরোপিত কারিগরি ও অশুল্ক প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলায় তিনি খাতভিত্তিক নতুন অ্যাক্রেডিটেশনন স্কিম চালু করতে বিএবিকে নির্দেশনা দেন।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, রফতানি বাণিজ্যে অ্যাক্রেডিটেশনের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। এ বাস্তবতায় দেশে অ্যাক্রেডিটেশন কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। বাজার চাহিদার আলোকে বিএবি’র কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণ করে গুণগতমানের পণ্য ও সেবা উৎপাদনের সুযোগ বাড়াতে হবে। তিনি বিএবিকে বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে সরকারের সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানান।
এসআই/এনএফ/জেডএ/জেআইএম