শেয়ারবাজারে মূল্য সংশোধন
টানা ১১ কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর সোমবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) কিছুটা দরপতন হয়েছে। টানা ঊর্ধ্বমুখীতার কারণে এই দরপতনের মাধ্যমে বাজারে কিছুটা মূল্য সংশোধন হয়েছে বলে মনে করছেন শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলছেন, টানা উত্থানের পর কিছুটা পতন হবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ টানা উত্থানের কারণে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেশ বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ তাদের কাছে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে কিছুটা প্রফিট (মুনাফা) তুলে নিচ্ছেন। এতে বাজারে কিছুটা হলেও বিক্রির চাপ বেড়েছে। আর বিক্রির চাপ বাড়ার কারণে মূল্য পতন হয়েছে।
বাজার পর্যালোচনা দেখা যায়, সোমবার ডিএসইতে সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে।
এদিন বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১১৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১৯৯টি। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৩০টির।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৬৫৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অপর দুটি মূল্যসূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৮৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৬৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী বলেন, এটি সাধারণ মূল্য সংশোধন। এ দরপতনে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। টানা উত্থানের পর কিছুটা মূল্য সংশোধন হবে এটাই স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, সোমবার দরপতনের আগে টানা ১১ কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী ছিল শেয়ারবাজার। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বাড়ে ৪৭০ পয়েন্ট। সেখান থেকে সূচকটি ৩১ পয়েন্ট কম খারাপ কিছু না। একটু দাম বাড়বে, এরপর আবার কিছুটা মূল্য সংশোধন হবে। এভাবেই শেয়ারবাজার এগিয়ে যাবে। মূল্য সংশোধন না হয়ে বাজার টানা ঊর্ধ্বমুখী থাকা ভালো লক্ষণ না।
এদিকে মূল্যসূচক ও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সোমবার ডিএসইতে লেনদেনও কিছুটা কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৯৬৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ২৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সে হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৬১ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
টাকার অংকে এদিন ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অলেম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৩৩ লাখ টাকার। আর ২১ কোটি ৯৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিবিএস কেবলস।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- সিঙ্গার বিডি, বেক্সিমকো, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিং, ড্রাগন সোয়েটার, গ্রামীণ ফোন, বিডি থাই অ্যালুমেনিয়াম এবং প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স ৮৮ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৪৪২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪১ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার মিউচ্যুয়াল ফান্ড ইউনিট। লেনদেন হওয়া ২৭৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৯টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির দাম।
এমএএস/এমএমজেড/এমকেএইচ