ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়নে কেউ কাজ করে না, শুধু সেমিনার করে
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন সূচকের (ইজ অব ডুয়িং বিজনেস) উন্নতিতে কেউ কাজ করে না, শুধু সেমিনার করে।
‘ডুয়িং বিজনেস’ সূচকের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে আমি এটার কথা বললাম। তিনি বললেন, এটা নিয়ে কেউ তো কোনো কাজ করে না, সেমিনার করে। দেশে-বিদেশে সেমিনার হয়, আমরা বিদেশে যাই সেমিনার করার জন্য। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তো সেমিনার দেখে না, বিদেশিরা ব্যবসা করতে চাইলে প্রথমেই ব্যবসা উন্নয়ন সূচক দেখে। ১৯০টি দেশের মধ্যে র্যাংকিংয়ে ১৭৬ স্থানে দেখলে এখানে কেউ ব্যবসা করতে আগ্রহ প্রকাশ করবে? বিদেশে গিয়ে বক্তৃতা দিয়ে আসি, পরে বিনিয়োগকারীরা দেখে দেশের এমন অবস্থা!’
মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বিডা আয়োজিত ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ র্যাংকিংয়ে উন্নতির লক্ষ্যে গঠিত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির প্রথম সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ ও বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম।
ব্যবসার পরিবেশ উন্নয়ন সূচকে কোনো উন্নতি করতে না পারায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) প্রতি ক্ষুব্ধ হয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। ব্যবসা শুরু করতে গিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পেতে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডেও তিনি হতাশা প্রকাশ করেন।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘১৯০টি দেশের মধ্যে আমাদের অবস্থান ১৭৬। আমরা বলি, বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। সব ক্ষেত্রেই আমরা এগিয়ে গিয়েছি। অথচ ইজ অব ডুয়িং বিজনেস ক্ষেত্রে আমাদের কোনো ধরনের অগ্রগতিই হয়নি।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই সূচকে কেন পিছিয়ে আমরা? দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, আমি এখন কাগজে দেখলাম এই কমিটি ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি গঠন করা হয়েছে। আর আজ ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে এসে কমিটির প্রথম সভা হচ্ছে! তাহলে আমরা এগিয়ে যাব কীভাবে?’
এসডিজি অর্জনে স্থিতিশীল নিরাপত্তা দরকার উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল পুলিশসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা বাহিনীর উন্নয়নের তথ্য তুলে ধরেন। নৌপরিবহনমন্ত্রী কাস্টমসের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
দেশের সব প্রতিষ্ঠানে কাগজবিহীন ডিজিটাল সেবা চালু করার আহ্বান জানিয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার থাকতে হবে। অনলাইনে ফর্ম আছে, বাকিটা হাতে করতে হয়। এমন হলে চলবে না। সমস্যা হলো, ডিজিটাল জিনিসটা আসলে কী, সেটা অনেকে বোঝে না।
এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগামী জানুয়ারি থেকে ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করতে পারলে ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ সূচকে দ্রুত উন্নতি করতে পারব। সূচকটিতে বর্তমানে বাংলাদেশ ১৭৬তম স্থানে অবস্থান করলেও ২০২১ সালের মধ্যে ৯৯-এ নামিয়ে আনার প্রত্যাশার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
এমইউএইচ/বিএ