ছুটির দিন আয়কর মেলায় উপচেপড়া ভিড়
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আয়কর মেলায় উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শুক্রবার হওয়ায় আয়কর মেলায় রাজস্ব আদায়ের হারও বাড়বে। এজন্য রাজস্ব কর্মকর্তা তথা জনবলও বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
আজ মেলার ৪র্থ দিন। সকাল থেকেই করদাতাদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মুখরিত হয়ে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। কেউ দ্রুত রিটার্ন পরিশোধ করতে দিনের প্রথম প্রহরে এসে মেলায় হাজির হয়েছেন।
নবম বারের মতো আয়োজিত আয়কর মেলা এবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে চলছে। একই সঙ্গে ঢাকাসহ দেশের ৮টি বিভাগ, ৫১টি জেলা এবং ১৮টি উপজেলাসহ মোট ৭৭টি স্পটে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সৈয়দ এ মুমেন জানান, তৃতীয় দিনে ২৪৪ কোটি ৮২ লাখ ৬৯ হাজার ৮৩৩ টাকার আয়কর সংগ্রহ হয়েছে। শুক্র ও শনিবার এ আয়ের হার দ্বিগুণ হতে পারে বলে আশাবাদী তিনি।
মেলায় ব্যাংক বুথ ছাড়াও ই-পেমেন্টের মাধ্যমে অনলাইনেও জমা দেয়া যাচ্ছে আয়কর। করা যাচ্ছে ই-ফাইলিং। কর নিবন্ধন (ই-টিআইএন) নিতেও সময় লাগছে খুবই কম। যাবতীয় বিড়ম্বনা ছাড়া সহজে আয়কর জমা দিতে পেরে সন্তুষ্ট করদাতারা।
মেলা ঘুরে দেখা যায়, মেলায় মুক্তিযোদ্ধা ও সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য আলাদা বুথ রাখা হয়েছে। বুথ রাখা হয়েছে প্রতিবন্ধীদের জন্যও।
কর দিতে আসা প্রবীণ ব্যক্তি নুরুল ইসলাম বলেন, দেশ পরিচালনার অর্থ জনগণের কাছ থেকে নিয়ে থাকে সরকার। ওই অর্থ দেশের উন্নয়নে ব্যয় হয়। আমরা অর্থ না দিলে সরকার কোথায় পাবে। তাই দেশের উন্নয়নের স্বার্থে সবার কর দেয়া উচিৎ।
বুথে কর্মরর্ত এনবিআর কর্মকর্তা খান মো. জাহাঙ্গীর বাবুল বলেন, আয়কর মেলার রিটার্ন দাখিল করেছেন সাড়ে তিনশর বেশি মুক্তিযোদ্ধা। এ সময় তারা বেশ আনন্দের সঙ্গে কর দিয়েছেন। তাদের কাছ থেকে কত অর্থ আদায় হয়েছে, তা এখনও গণনা করা হয়নি।
খুব সকালেই কর দিতে আসেন কাঠাল বাগানের বাসিন্দা আলী আজগর। তিনি বলেন, সকালে মেলায় খুব একটা ভিড় থাকে না। তাই সকালেই এসেছি। অল্প সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করতে পেরেছি।
তিনি বলেন, কর অঞ্চলগুলোতে গেলে অনেক প্রশ্ন করা হয়, খুটিনাটি ভুল ধরা হয়। কিন্তু মেলায় কর্মকর্তারা হয়রানি করের না। এ জন্য মেলায় কর দিতে এসেছি।
ই-পেমেন্টের মাধ্যমেও কর দিচ্ছেন অনেক করদাতা। এনবিআর ওয়েবসাইট ব্যবহার করে খুব সহজেই জমা দেয়া যাচ্ছে আয়কর। এক্ষেত্রে ২৮টি ব্যাংকের ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করা যাবে। গেটওয়ে পেমেন্ট সিস্টেম কিউ ক্যাশ এ সেবা দিচ্ছে। কিউ ক্যাশের বুথে কর্মরত হাসান মাহমুদ বলেন, গত তিন দিনে ১১৯ জন করদাতা ই-পেমেন্টের মাধ্যমে কর জমা দিয়েছেন। মেলায় এগিয়ে চলছে ই-ফাইলিংকার্যক্রমও। ই-ফাইলিং বলতে অনলাইনেই রিটার্ন জমা দেয়াকে বোঝায়। সেক্ষেত্রেও দুই শতাধিক রিটার্ন জমা পড়েছে।
আয়কর মেলার আহ্বায়ক ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) জিয়া উদ্দিন মাহমুদ বলেন, শুক্র ও শনিবারের জন্য আমাদের বিশেষ প্রস্তুতি রয়েছে। আশা করি, কেউ ফিরে যাবে না। মেলায় সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রাখা হয়েছে। করদাতাদের আশা যাওয়ার জন্য যানবাহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলা চলছে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
এমএ/এনডিএস/পিআর