সবজি বাজারে স্বস্তি
রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলো শীতের সবজি কপি, শিম, মুলা, লাউ, শালগমের পাশাপাশি বিভিন্ন শাকে ভরপুর। শীতের শাক-সবজির সরবরাহ বাড়ায় কমেছে সব ধরনের সবজির দাম। বেশিরভাগ সবজিই পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। ফলে সবজির দামে নেমে এসেছে স্বস্তি।
শুক্রবার (৯ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচার বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা এক পাল্লা (৫ কেজি) শিম বিক্রি করছেন ১০০ টাকা। অর্থাৎ প্রতিকেজি শিমের দাম ২০ টাকা। এসব শিম খুচরা বাজারে অঞ্চলভেদে ৩০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যেখানে দুই সপ্তাহ আগেও খুচরা বাজারে শিমের কেজি ছিল ১০০ টাকারও বেশি।
শিমের মতো দামে স্বস্তি দিচ্ছে ফুলকপি, পাতাকপি ও লাউয়ে। আকার ও মানভেদে খুচরা বাজারে ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ১০-৪০ টাকা পিস, পাতা কপি পাওয়া যাচ্ছে ২০-৩০ টাকায়। আর বড় আকারের লাউ পাওয়া যাচ্ছে ২৫-৪০ টাকায়।
তবে এসব সবজিতে ক্রেতারা স্বস্তি পেলেও টমেটো ও গাজরের দামে অস্বস্তি রয়েছে। কমতি বাজারেও আগের মতোই ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে গাজর। পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। আর নতুন আসা কাঁচা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকায়।
সবজির দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা মো. রইস বলেন, শিম, কপি, লাউসহ বেশিরভাগ সবজির দাম কিছুটা হলেও স্বস্তিদায়ক। তবে টমেটো ও গাজরের দাম কমছে না। দীর্ঘদিন ধরেই সবজি দুটি ৮০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। টমেটো ও গাজরের দাম কমলে বাজার করে আরও স্বস্তি পাওয়া যেত।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে কাঁচা টমেটো আসতে শুরু করেছে। দেশি গাজরও কিছুদিনের মধ্যে বাজারে আসবে। সুতারং অন্যান্য সবজির মতো টমেটো ও গাজরের দামও শিগগিরই কমবে।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. ইলিয়াস বলেন, এখন তো প্রায় সব ধরনের সবজি ২০-৩০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। ফুলকপি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ১০ টাকায়। তবে টমেটো ও গাজরের দাম এখনো বেশি, এটা ঠিক। আশার কথা হলো, বাজারে কাঁচা টমেটো আসতে শুরু করেছে। কিছু দিনের মধ্যে দেশি গাজরও চলে আসবে। তখন টমেটো, গাজরসহ সব ধরনের সবজির দাম আরও কমবে।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, পটল ও বেগুন বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা কেজিতে। এক সপ্তাহ আগে এ সবজি দু’টি ৩০-৪০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ঢেঁড়স, করলা, ঝিঙা, ধুন্দলের দাম কমে ২০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে সবজির পাশাপাশি এসেছে বিভিন্ন শীতকালীন শাকও। বাজারভেদে এক আটি পালন শাক বিক্রি হচ্ছে ১০-২০ টাকায়। লাল ও সবুজ শাক বিক্রি হচ্ছে ৫-১০ টাকা আটি। লাউ শাক পাওয়া যাচ্ছে ২০-৩০ টাকায় এবং ১০-২০ টাকা পাওয়া যাচ্ছে পুঁই শাকের আটি।
সবজির পাশাপাশি কিছুটা দাম কমেছে কাঁচা মরিচের। বাজার ও মানভেদে এক পোয়া (২৫০ গ্রাম) কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়। তবে কোথাও কোথাও ৩০ টাকা কেজিও বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ।
এ ছাড়া দাম কমার তালিকায় রয়েছে পেঁয়াজ। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম। আগের সপ্তাহের মতোই আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকায়।
রামপুরার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সাহেদ মিয়া বলেন, গত সপ্তাহে এক কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ৪০-৪৫ টাকা। এখন এক কেজি দেশি পেঁয়াজ ৩৫ টাকায়। গত এক মাসেই পেঁয়াজের দাম দুই দফায় কেজিতে প্রায় ১৫ টাকা কমেছে।
দাম অপরিবর্তিত রয়েছে বয়লার মুরগি, ডিম, গরু ও খাসির মাংস এবং মাছের। বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকায়। গরুর মাংস ৪৮০-৫০০ এবং খাসির মাংস ৬৫০-৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর প্রতিটি মাছের বাজারেই ইলিশে ভরপুর। ৬০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকায়। আর পিস বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৫০০ টাকায়। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকায়। আর ছোট আকারের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়।
গত সপ্তাহের মতোই বাজার ভেদে রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৪০০ টাকা কেজিতে। পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়, শিং মাছ ৩০০-৫০০, তেলাপিয়া ১২০-১৬০, পাঙ্গাস ১২০-১৫০ এবং পুঁটি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-২০০ টাকায়।
এমএএস/আরএস/এমএস