নিজ দেশের স্টলেই টানছে তাদের মন
প্রযুক্তিগত সহায়তায় প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে হরেক রকম খাদ্যপণ্য তৈরিকে আরও উৎসাহিত করতেই দেশে ছয় বছর ধরে হচ্ছে বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো। এবার চলছে ষষ্ঠতম মেলা। এতে দেশি-বিদেশি ১৪৯টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। শুক্রবার জুমার নামাজের পর মেলায় লক্ষ্য করা যায় উপচেপড়া ভিড়। তবে দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের বেশি ভিড় ছিল দেশীয় স্টলগুলোতেই। নিজ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের স্টলেই তাদের মন বেশি টানছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুরু হয় প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য নিয়ে তিন দিনব্যাপী ‘বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো-২০১৮’। চলবে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত।
শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকেই ভিড় জমে এক্সপো’তে। তবে জুমার নামাজের পর দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের ভিড় আরও বাড়তে থাকে। বিকেল সাড়ে ৪টার পর উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। প্রত্যেকটি স্টলেই ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারের মেলায় কনফেনশনারি জুস, ড্রিংস, বেকারি, মসলা, নুডলস, স্ন্যাকস, বেভারেজ, ডেইরি, ফ্রজেন ফুড ক্যাটাগরির হরেক পদের খাদ্যপণ্য প্রদর্শনী ও বিক্রি করছে ‘প্রাণ’। এ ছাড়া রয়েছে টেস্টি ট্রিট ও মিঠাইয়ের নানা পদের সুস্বাদু খাবার। তবে প্রাণ-এর স্টলে বেশি বিক্রির মধ্যে স্ন্যাকস আইটেমের টান পড়েছে। ফ্রজেন আইটেমও কিনছেন ক্রেতারা।
প্রাণ-এর বিপণন শাখার ম্যানেজার জানান, দেশের বাজারে প্রাণ-এর প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য বিশেষ স্থান দখল করে আছে। ক্রেতাদের আস্থার প্রতিদান দিতে ‘প্রাণ’ নিত্যনতুন সব পণ্য গুণগত মান রক্ষা করেই তৈরি ও বিক্রি করছে। তাই ক্রেতাদের ভিড় এখানে বেশি।
দেশের বাজারে লিচি, পুডিং, চানাচুর, মটরভাজা নুডলস ও গুড়া মসলাসহ ৪০ পদের পণ্য নিয়ে মেলায় অংশ নিয়েছে হিফস এগ্রো ইন্ডাস্ট্রি।
প্রতিষ্ঠানটির বিপণন শাখার ম্যানেজার আনিসুর রহমান জানান, দেশের বাজার ধরতে ও ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার মতো মানসম্পন্ন পণ্যের সমাহার করেছে হিফস। এর বাইরে বিদেশি ক্রেতা ও আমদানিকারকদের আকৃষ্ট করতে এক্সপোর্ট কোয়ালিটির পণ্যের প্রদর্শনীও চলছে।
হরেক পণ্য নিয়ে স্টল সাজিয়েছে ডেনিস, ইফাদ, এপি, ইনশা, অলিম্পিক, বনফুল-কিষাণ, ট্রপিকা মধু, এসএস ফুডস, দেশবন্ধু ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, গ্লোব সফট ড্রিংকস, সজীব গ্রুপ, আরএম অ্যাগ্রো, প্রাইম পুষ্টি বিডি, ইউরো ফুডস, বোম্বে সুইটস, এজি ফুডস, এলিন ফুডস, খন্দকার কনজ্যুমার ফুডস।
সপরিবারে মেলায় আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম বলেন, মেলায় এসে খুব অবাক হচ্ছি। নিজেরই কতো অজানা বিষয় এখানে দেখছি। তার ওপর সন্তানের প্রশ্নের পর প্রশ্ন। আর স্ত্রীও অনেক অজানা বিষয় জানলো যে, সহজে খাদ্যপণ্য তৈরির উপকরণও এখানে আছে। বেশ ভালো লাগছে। প্রসেসিংয়ের পর ফ্রজেন করা সিঙ্গারা সমুচা তেলে ভেজে গরম করে খাওয়াটাও বেশ উপভোগ্য প্রাণ-এর স্টলে। আসলে নিজ দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর স্টলগুলোতেই মন বেশি টানছে।
মোহাম্মদপুর থেকে আসা দর্শনার্থী বেলালুর রহমান বলেন, আমাদের দেশীয় ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠানের বাইরে অনেক প্রতিষ্ঠান উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। ভালো ভালো মানের পণ্য তৈরি করছে। মেলায় না আসলে বুঝতামই না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) ও এক্সট্রিম এক্সিবিশন অ্যান্ড ইভেন্ট সলিউশনের উদ্যোগে এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলাটির মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে জাগোনিউজ২৪.কম।
মেলার আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জন্মলগ্ন থেকেই ফুড প্রসেসিং সেক্টরের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছে বাপা। বাপার মূল লক্ষ্য হলো ফুড প্রসেসিং সেক্টরের ক্রমবর্ধমান বিকাশ নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ সেক্টরকে এগিয়ে নেয়া। একই সঙ্গে এ সেক্টরের সার্বিক সমন্বয় নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন আরও বেগবান করা।
এবার মেলায় দেশি-বিদেশি স্টলের পাশাপাশি জব ফেয়ারেরও আয়োজন করা হয়েছে। রাজধানী ঢাকার প্রায় প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে এ মেলায় আসার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
জেইউ/এএস/জেডএ/পিআর