পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন
সোমবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) চলতি বছরের সব থেকে বড় দরপতন হওয়ার পরের কার্যদিবস মঙ্গলবারে এসে বাজারটিতে প্রায় পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোনিম্ন লেনদেন হয়েছে।
ডিএসইর পাশাপাশি লেনদেন খরা দেখা দিয়েছে অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই)। আর ডিএসইতে মূল্যসূচক সামন্য বাড়লেও সিএসইতে কমেছে। অবশ্য যে পরিমাণ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে দুই বাজারেই কমেছে তার থেকে বেশি।
এদিকে দরপতনের হাত থেকে বেরিয়ে আসার লক্ষ্যে মঙ্গলবার সকালে ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশে (আইসিবি) জরুরি বৈঠকে বসে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বন্ড বিক্রির দুই হাজার কোটি টাকা আগামী সপ্তাহ থেকেই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করবে আইসিবি।
শেয়ারবাজারে লেনদেন চলাকালীন সময়েই আইসিবির বিনিয়োগের এই সুখবর আসে। তবে বাজারে সুখবরটি খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি। যে কারণে এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩০ পয়েন্টের ওপরে বেড়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকেনি।
মূলত লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় এসে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম পড়তে থাকে। ফলে ডিএসইতে এদিন লেনদেনে অংশ নেয়া ১৩৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১৫৪টি। আর ৫৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের এমন দাম কমার পরও ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৭১ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অপর দুটি মূল্যসূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২১১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৬৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৭৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৩৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৫৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
এদিন ডিএসইতে শুধু লেনদেনই কমেনি। চলতি বছরের ৩১ মে’র পরে বাজারটিতে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে। ৩১ মে ডিএসইতে লেনদেন হয় ৩৬১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এরপর মঙ্গলবারের আগ পর্যন্ত ডিএসইতে আর ৩৮০ কোটি টাকার নিচে লেনদেন হয়নি।
মঙ্গলবার টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ডেল্টা লাইফের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা কেপিসিএল’র ১৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১২ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সামিট পাওয়ার।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- গ্রামীণ ফোন, ড্রাগন সোয়েটার, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল, বিবিএস কেবলস, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, বেক্সিমকো এবং মুন্নু সিরামিক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স ২৬ পয়েন্ট কমে ৯ হাজার ৭৭৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২৪২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪১টির। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৭টির।
এমএএস/এসএইচএস/আরআইপি