ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

আগামী পাঁচ বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০১:৩৫ পিএম, ০৭ অক্টোবর ২০১৮

টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে আগামী পাঁচ বছর বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকারকে আরও পাঁচটি বছর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে পারলে ১০-১৫ বছরে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হবে না।’

রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে রোববার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আয়োজিত ‘বিনিয়োগ শিক্ষার গরুত্ব ও বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।

মুহিত বলেন, ‘আমাদের বিনিয়োগ আসলেই খুবই কম। আমরা এখন হয় তো ৩০ শতাংশ বিনিয়োগ করছি। তার মধ্যে ২২ শতাংশ বেসরকারি খাতের, বাকিটা সরকারের। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোতে বিনিয়োগের হার অনেক বেশি। ভারতে বিনিয়োগের হার সব সময় বেশি ছিল। এটা নতুন কিছু নয়, ত্রিশের দশকেও ভারতের বিনিয়োগের হার ৩০ শতাংশের বেশি ছিল।‘

‘যাই হোক আমরা একটু একটু করে ঠেলেঠুলে বিনিয়োগ প্রায় ৩০ শতাংশে নিয়ে এসেছি। আশা করছি, এটা আরও একটু বাড়বে এবং আর একটু বাড়লে আমাদের অর্থনীতির যে একটি ঊর্ধ্বগতি এসেছে এটা আরও বেগবান হবে, আর শক্তিশালী হবে’ বলেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার ১০ বছর ক্ষমতায় আছে নিরবচ্ছিন্নভাবে, এটা জাতির জন্য একটা সৌভাগ্য। এমন নিরবচ্ছিন্ন ক্ষমতায় না থাকলে, এ রকম ঊর্ধ্বগতি এতো সহজে পাওয়া যায় না। আরও পাঁচটি বছর যদি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করতে পারি তাহলে বাংলাদেশ এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছাবে সেখান থেকে ১০-১৫ বছরে একটি সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ে উঠতে কোনো অসুবিধা হবে না।’

আগামী পাঁচটি বছর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মুহিত বলেন, ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্র (এসডিজি) যেগুলো ২০৩০ সালের মধ্যে করতে হবে, সেগুলো আমরা মোটামুটিভাবে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই করতে পারব। সেটা করতে পারলে প্রধানমন্ত্রী যে স্বপ্ন আমাদের দেখাচ্ছেন- ২০৪১ সালে আমরা একটি সমৃদ্ধশালী দেশ হিসাবে পরিণত হব, সেই স্বপ্নটি সত্যিকার ভাবেই সার্থক হবে।’

তিনি বলেন, বিনিয়োগ হওয়ার ফলেই অর্থনীতির উন্নয়ন হয়। আমরা মোটামুটিভাবে জানি গত ১০ বছর আমাদের অর্থনীতির যথেষ্ট উন্নয়ন হয়েছে এবং উন্নয়ন হচ্ছে। এর পেছনে রয়েছে বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি। আমরা এখন মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩০ শতাংশ বা তার একটু বেশি বিনিয়োগ করছি। তার মধ্যে ব্যক্তি মালিকানা খাতটি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ, তারাই ব্যক্তি বিনিয়োগটা বাড়াতে পারে।’

‘তবে সরকারের একটা দায়িত্ব রয়েছে এবং আমরা গত ১০ বছর সরকারি বিনিয়োগ অনেকাংশে বাড়িয়েছি। কারণ সরকারি বিনিয়োগে যেসব সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা হয়, তার ওপর নির্ভর করে অন্যান্য বিনিয়োগ হয়। রাস্তা-ঘাট সরকার যদি না বানিয়ে দেয়, তাহলে লোকজন পণ্য উৎপাদন করবে কেন? কারণ তার তো মার্কেট তখন থাকবে না। এখান থেকে অন্য খানে পণ্য যেতে হবে। সুতরাং রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন প্রয়োজন। আরও বিভিন্ন ধরনের সেবা আছে, যেগুলো সরকার ব্যবস্থা করে’ বলেন মুহিত।

বাংলাদেশে এখনও শক্তিশালী পুঁজিবাজার গড়ে ওঠেনি মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, বিএসইসির বয়স ২৫ বছর হয়ে গেছে, এ সময়ের মধ্যে আমরা একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজার গড়ে তুলেছি- এ কথা বলব না। তবে শক্তিশালী পুঁজিবাজারের ভিত্তি স্থাপন হয়েছে। বর্তমান কমিশন ৮ বছর দায়িত্ব পালন করছে। তারা ৮ বছর ধরে এ প্রতিষ্ঠানটিকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন। আমি অত্যন্ত খুশি এ কমিশন অনেক পরিশ্রম করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে গেছে। ইতোমধ্যে ২০১৮ সালে একটি স্থানে নিয়ে গেছে। যাতে মনে হচ্ছে অচিরেই একটি পুঁজিবাজার গড়ে উঠবে।’

শেয়ারবাজারের স্বার্থে প্রয়োজন হলে বুক বিল্ডিং পদ্ধতি স্থগিত বা বন্ধ করা হবে বলে জানিয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন বলেন, বিএসইসি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের স্বার্থে কাট-অফ প্রাইসের তুলনায় ১০ শতাংশ কমে শেয়ার দেয়া হয়।

বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিঘ্নিত হয় এমন কোনও কাজ না করার জন্য মার্চেন্ট ব্যাংকারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) জন্য মিথ্যা হিসাব (ফলস অ্যাকাউন্ট) নিয়ে আসলে বিএসইসির কিছু করার থাকে না। এ ক্ষেত্রে নিরীক্ষক ও মার্চেন্ট ব্যাংকারদের সঠিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। যাতে প্রাথমিক পর্যায়ে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা পায়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম।

এমএএস/এনডিএস/এমএস

আরও পড়ুন