ব্যবসা পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা দেখতে আসছেন থাই ব্যবসায়ীরা
>> বড় অংকের বিনিয়োগে আগ্রহী থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা
>> দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানো সম্ভাব
আর্থ-সামাজিক উন্নতি, ধারাবাহিকভাবে জিডিপির প্রবৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ পরিস্থিতি বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশের প্রাথমিক স্বীকৃতি পাওয়ার পর বিদেশি উদ্যোক্তাদের আস্থার জায়গায় এখন বাংলাদেশ। তারই ধারাবাহিকতায় থাইল্যান্ডের বিনিয়োগকারীরা এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বড় অংকের বিনিয়োগে আগ্রহী। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর দেশটির ১৫ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে আসছেন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, থাইল্যান্ডের ১৫ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলটি আগামী ১৬ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সফর করবেন। প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে বিনিয়োগ ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং ব্যবসা পরিচালনায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে সরেজমিনে ধারণা নেবেন। এছাড়া বাংলাদেশের সরকারি, বেসরকারি এবং বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের সাথে সাক্ষাৎ করবেন এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামের ইপিজেডসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানও পরিদর্শন করবেন।
সূত্র জানায়, বর্তমানে থাইল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য তেমন নেই। এ অবস্থায় বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্বি-পক্ষিক বাণিজ্য বাড়ানোর পাশাপাশি বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে থাইল্যান্ড। দেশটির বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিভিন্ন খাতে বড় অংকের বিনিয়োগে আগ্রহী। যা কাজে লাগিয়ে লাভবান হতে পারে বাংলাদেশ।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, এর আগেও থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসেছিলেন। বাংলাদেশের প্রতি তাদের আগ্রহ বাড়ছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগে সুযোগ-সুবিধা ভালো। আর্থ-সামাজিক অবস্থা, জিডিপির প্রবৃদ্ধি সবকিছু মিলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশে ভাবমূর্তি খুব ভালো। সবকিছু মিলে বাংলাদেশে একটা বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি হয়েছে। যেটা তাদেরকে আকৃষ্ট করেছে।
তিনি আরও বলেন, থাইল্যান্ডের পাশাপাশি জাপান, যুক্তরাষ্ট্রেরও বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ আছে। এর ধারাবাহিকতায় তারাও আসছে। তারা যদি বাংলাদেশ বিনিয়োগ করে তাহলে আমরা তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা দেব। বর্তমানে থাইল্যান্ডের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য তেমন নেই। দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য অনেক বাড়ানো সম্ভব।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের এ সফরে বিভিন্ন এজেন্সি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়ী সংগঠনের জন্য দুই দেশের বাণিজ্য প্রসারের নতুন দিগন্ত উম্মোচন হবে। এ জন্য সফরকে ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
সূত্র জানায়, আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর প্রতিনিধি দলটি বিমানবন্দর থেকে সরাসরি সাভার ইপিজেড পরিদর্শন করবেন। ঢাকা ইপিজেড কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। পরদিন ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে থাই কমার্শিয়াল কাউন্সিলরের সাথে সাক্ষাৎ শেষে দুপুর সাড়ে ১২টায় এফবিসিসিআই পরিদর্শন করবেন এবং এফসিসিআই সভাপতির সাথে মতবিনিময়ে অংশ নেবেন থাই ব্যবসায়ীরা। বিকেল ৪টায় বিজিএমইএ ভবন পরিদর্শন করবেন এবং বিজিএমইএ সভাপতিসহ নেতাদের সাথে মতবিনিময় করবেন।
১৮ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় প্রতিনিধিদল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পরিদর্শন করবেন এবং বাংলাদেশ ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশ সম্পর্কে মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করবেন। বাণিজ্য সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিডা, বিইজেডএ, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন এবং আইসিটি ডিভিশন সংশ্লিষ্ট বিষয়ে থাই প্রতিনিধি দলকে ব্যবসা পরিচালনার বিভিন্ন বিষয়ে ধারণা দেয়া হবে। সভা শেষে প্রতিনিধি দল বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। একই দিন প্রতিনিধিদল বিকেলে বিমানযোগে চট্টগ্রাম যাবেন।
১৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম ইপিজেড পরিদর্শন করবেন প্রতিনিধি দলটি। সেখানে ব্রিফিং শেষে একটি ইলেকট্রনিক্স এবং একটি চামড়া শিল্প প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করবেন। দুপুর সাড়ে ১২টায় চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ নেতাদের সাথে মতবিনিময় এবং বিকেল ৩টায় চট্টগ্রামে অবস্থিত একটি ফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি পরিদর্শন করবেন তারা। পর দিন প্রতিনিধিদল ঢাকায় ফিরে আসবেন এবং ২১ সেপ্টেম্বর ব্যাংককের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করবেন।
এমইউএইচ/আরএস/এমএস