ডিমের দাম চড়া, ঝাল কমেনি কাঁচা মরিচের
ঈদের পর থেকে রাজধানীর বাজারে অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে ডিমের দাম। বর্তমানে পাইকারি ও খুচরা উভয় বাজারে ডিমের দাম রোজার মাসের তুলনায় ডজনে (১২টি) বেড়েছে প্রায় ৪০ টাকা। রোজায় ৭০ টাকার নিচে বিক্রি হওয়া ডিমের ডজন এখন ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে।
এদিকে গত দুই সপ্তাহ ধরে চড়াদামে বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচের দাম এখনো চড়াই রয়েছে। বিভিন্ন বাজারে কাঁচামরিচ কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকার ওপরে। তবে গত সপ্তাহের মতো এখনো সস্তাই বিক্রি হচ্ছে সবজি। প্রায় সব সবজির কেজি ৩০-৪০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও, সেগুনবাগিচা ও শান্তিনগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রোজায় ডিমের ডজন বিক্রি হয় ৬৫-৭০ টাকায়। তবে ঈদের পর ডিমের দাম কয়েক দফা বেড়েছে। আর শেষ সপ্তাহে ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ৫-৭ টাকা। এতে এক ডজন ডিমের দাম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০০ টাকায়। খুচরা দোকানে ডিমের দাম আরও বেশি।
হাজীপাড়া বৌ-বাজারের ডিম ব্যবসায়ী মো. সাবু বলেন, রোজায় ডিম যে দামে কিনে আনতাম এখন তার দ্বিগুণ হয়েছে। ডিমের দাম এতটাই বেড়েছে যে, এক ডজন ডিম ৯৫ টাকার নিচে বিক্রি করার উপায় নেই। অথচ ঈদের পরও কিছুদিন ডিমের ডজন ৭০ টাকায় বিক্রি করেছি।
এদিকে খুচরা পর্যায়ে মুদি দোকানে ডিমের দাম বেড়ে প্রতিপিস বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। এ বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী শামছু বলেন, এখন আমাদের একপিস ডিম কিনতেই খরচ পড়ছে ৮ টাকা। সুতরাং ১০ টাকার নিচে একপিস ডিম বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে গত সপ্তাহের মতো শুক্রবারও ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আড়তে মরিচের সরবরাহ কম, যে কারণে দাম চাড়াই রয়েছে। গত সপ্তাহে ১৪০-১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচের দাম একই রয়েছে। আর এক পোয়ার (২৫০ গ্রাম) হিসাবে মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়।
মরিচের এমন দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মো. জব্বার বলেন, বাজারে এখন মরিচের অভাব নেই। তবে দাম একটু বেশি। অবশ্য এখন মরিচের ঝাল বেশি। কারণ এখনকার সব মরিচই বাত্তি (পরিপক্ব)।
বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পটল, ঝিঙা, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, বেগুন, কাকরুল, ধেড়স, মিষ্টি কুমড়া, পেপে, করলাসহ প্রায় সব সবজিই বাজারে ভরপুর। ফলে দামও তুলনামূলক সস্তা। প্রায় সব সবজি আগের সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহে ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। টমেটোর মতো দাম অপরিবর্তিত থাকার তালিকায় রয়েছে, চিচিঙ্গা, পটল, ঝিঙা, ধুনদল, কাকরুল, করলা, বরবটি। এসব সবজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা কেজি দরে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বেগুন। পেপে আগের সপ্তাহের মতো ২০-২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. শামছুদ্দিন বলেন, এখন কাকরুল, পটল, ধেড়সের ভরা মৌসুম। আর বৃষ্টি, বন্যা না থাকার কারণে সবজির কোনো ক্ষতি হয়নি। যে কারণে বাজারে এখন সব সবজির দাম যথেষ্ট কম। বন্যা না হলে সবজির দাম খুব একটা বাড়ার সম্ভাবনা নেই।
কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী খায়রুল বলেন, এখন সব ধরনের সবজিতে বাজার ভরপুর। পটল, কাকরুল, বরবটি, ঝিঙা, ধুনদল, বেগুন যা চাইবেন মনোমত পাবেন।
এদিকে পেঁয়াজের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা কেজি। আর আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৩০-৩৫ টাকায়।
এমএএস/জেডএ/পিআর