প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বিরোধী দলের বক্তব্য উগ্র : মুহিত
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে সরকারের অংশ হয়েও বিরোধী দলের কিছু সদস্যের বাক্তব্য দারুণ উগ্র। এটা যথাযথ নয় বলে আমার মনে হয়। কারণ তাদের মন্ত্রীরা আমাদের সঙ্গে বসে প্রস্তাবিত বাজেট পাশ করেছেন।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তারা বিরোধী দল, ঠিক আছে। তবে এটা মনে রাখা উচিত যে, তারা বিরোধী দল হলেও সরকারের অংশ। তাদের দলের ক্যাবিনেট সদস্যরাও প্রস্তাবিত বাজেটে অনুমোদন দিয়েছেন। সুতরাং এটা আমার একার বাজেট নয়।’
বিরোধিতার বিষয়ে ব্যাখা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি অধিকাংশ সময় সংসদে উপস্থিত ছিলাম। তারা সংসদে এমন আচরণ করেছেন যে, মনে হয়েছে তারা সরকারের কোনো অংশ নয়।’
প্রস্তাবিত বাজেটে পরিবর্তন আনা হবে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সংসদে যেসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত দেবেন, প্রধানমন্ত্রী নতুন কী কী পরিবর্তন আনতে পারেন- সেসব বিষয় বিবেচনায় আনা হবে।’ প্রধানমন্ত্রী কোনো পরিবর্তন আনতে বলেছেন কিনা- এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এখনও আমি জানি না। আজ সন্ধ্যায় জানতে পারব। কারণ সন্ধ্যায় তার সঙ্গে আমার এ বিষয়ে বৈঠক আছে।’
তিনি বলেন, ‘সংসদে বাজেট প্রস্তাবের পর আগামীকালসহ ১৯ দিন সংসদে এ নিয়ে আলোচনা হবে। এ সময় সংসদের বাইরে বিভিন্ন গণমাধ্যম, ব্যবসায়ী সমিতি, বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের কাছ থেকে যেসব মন্তব্য ও পরামর্শ এসেছে সেগুলোর ওপর নির্ভর করে কিছুটা পরিবর্তিত এবং একেবারেই নতুন যে বিষয়গুলো আসবে সেগুলো আগামীকালই জাতীয় সংসদে জানিয়ে দেয়া হবে।’
আরও পড়ুন >> বাজেট বিষ-মধু মিশ্রিত
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আগামীকাল খুব গুরুত্বপূর্ণ দিন। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর এদিন প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেবেন। জাতীয় সংসদে আগামী ২৮ জুন বাজেট পাশ হবে। আগামীকাল ২৭ জুন পাশ হবে অর্থবিল।’
বাজেট পাশের তারিখ এগিয়ে আনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শনি ও রোববারে যেতে চাই না। ২৮ তারিখে শেষ করে দেব। আমরা ইচ্ছা করলে ৩০ তারিখে বাজেট পাশ করতে পরতাম। একদিন হয়তো বাড়ানো যেত। কিন্তু সেটা করা হয়নি।’
গত ৭ জুন 'সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ' নাম দিয়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। বাজেটের আকার গতবারের চেয়ে বাড়ানো হয় ৬৮ হাজার কোটি টাকা। নির্বাচনী বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা।
আরও পড়ুন >> ‘বাজেট নির্বাচনী কিন্তু গরিব মারার নয়’
বাজেট প্রস্তাবনায় অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে তিন লাখ ৩৯ হাজার ২৮০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড উৎস হতে দুই লাখ ৯৬ হাজার ২০১ কোটি টাকা (জিডিপির ১১ দশমিক ৭ শতাংশ) সংগ্রহ করা হবে। বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ এবং জিডিপি ৬ দশমিক ৮ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
এমইউএইচ/এমএমজেড/এমএআর/পিআর