ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

রেল সেবার মান বাড়াতে বড় উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:১৪ পিএম, ২৫ জুন ২০১৮

রেলের সেবা বিস্তৃত করতে বড় উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এজন্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহযোগিতায় ৩ হাজার ৬০২ কোটি টাকার প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। এর সিংহভাগ ২ হাজার ৮শ ৩৯ কোটি টাকা দেবে এডিবি। বাকি টাকা সরকরের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে।

মঙ্গলবার চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্পটি তোলা হচ্ছে। শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে। সভায় অনুমোদন পেলে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের রোলিং স্টক অপারেশন উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পে বিশাল এ অর্থ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। এই অর্থ দিয়ে ১ হাজার ১৬৫টি আধুনিক ইঞ্জিন ও ওয়াগন বা বগি কেনা হবে। এর মধ্যে ৪০টি ব্রডগেজ ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন), ৭৫টি মিটার গেজ ও ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যান, ৪০০টি মিটার গেজ ও ৩০০টি ব্রডগেজ কাভার্ড ভ্যান এবং ১৮০টি মিটারগেজ ও ১২০টি ব্রডগেজ বগি ওপেন ওয়াগন সংগ্রহ করা হবে।

পাশাপাশি ব্রডগেজ ও মিটারগেজ লাগেজ ভ্যানের জন্য বৈদেশিক প্রশিক্ষণ, সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ এবং ক্যাপিটাল ও মেনটেইন্যান্স স্পেয়ার্সও সংগ্রহ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, রেলের সেবার মান বাড়াতে বিভিন্ন লাইনে রেলের সংখ্যা বাড়ানোর বিকল্প নেই। কিন্তু ইঞ্জিন ও বগির কারণে সহজে তা বাড়ানো যায় না। এই অবস্থায় এডিবির সহযোগিতায় এই প্রকল্প নেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রকল্পটির মাধ্যমে নতুন রোলিং স্টক সংগ্রহ করা হবে। এতে পুরনো ও জারাজীর্ণ রোলিং স্টক প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে রোলিং স্টক বা বগি ও ইঞ্জিনের স্বল্পতা পূরণ করা হবে। রেলের আধুনিক নিরাপদ ও গুণগত মানের স্টক যুক্ত হবে। একই সঙ্গে ক্রমবর্ধমাণ চাহিদা পূরণে নতুন যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের ট্রেন পরিচালনা সহজতর হবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, বাংলাদেশ রেলওয়েতে বর্তমানে ২৭৪টি লোকোমোটিভ বা ইঞ্জিন রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১৮০টি মিটার গেজ ও ৯৪টি ব্রডগেজ। এর মধ্যে ৩৯টি ব্রডগেজ ইঞ্জিনের ইকোনমিক লাইফ রয়েছে। বাকিগুলো ৩০ বছরের বেশি পুরনো। সেগুলোর কুলিং সিস্টেম, স্টাটিং ও সাসপেনশন সিস্টেমও দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাই সেগুলো চালাতে অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ হচ্ছে, ব্যয়ও বাড়ছে। আবার এগুলোর খুচরা যন্ত্রপাতি আন্তর্জাতিক বাজারেও সহজলভ্য নয়। এ অবস্থায় ব্যয় সাশ্রয়ী রেল পরিচালনায় কমপক্ষে ১১০টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন প্রয়োজন। এজন্য চাহিদা পূরণে ৪০টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে।

অপরদিকে লাগেজ ভ্যানের অবস্থা আরো করুণ, রেলওয়েতে থাকা ৫৩টি মিটারগেজ লাগেজের মধ্যে ৪৮টি লাগেজই ৪৭ বছরের পুরনো। ১০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যানের বয়স ৩৭ বছরের ওপরে। যদিও এগুলোর অর্থনৈতিক মেয়াদ ৩৫ বছর। তাই মেয়াদোত্তীর্ণ ও জরাজীর্ণ লাগেজ ভ্যানের কারণে দেশে উৎপাদিত শাক-সবজি ও মৌসুমী ফলসহ মালামাল কমখরচে ও দ্রুত নিরাপদে পরিবহন করা সম্ভব হচ্ছে না। এজন্য ৭৫টি মিটার গেজ এবং ৫০টি ব্রডগেজ লাগেজ ভ্যান কেনা হবে। আবার, রেলের ৭০০টি বগি কাভার্ড ওয়াগনের মধ্যে মিটারগেজ সেকশনে ৪০২টি এবং ব্রডগেজ সেকশনে রয়েছে ৪১৯টি। এগুলোও ৩৬ বছরের পুরনো। এর বাইরে মিটারগেজের চলা ২৩১টি ওপেন ওয়াগনও ৫৪ বছরের পুরনো। পুরাতন এসব ওয়াগন প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে নিরাপদ পণ্য পরিবহনের নতুন কাভার্ড ও ওপেন ওয়াগন কেনার প্রস্তবা দেয়া হয়েছে।

এমএ/এসএইচএস/আরআইপি

আরও পড়ুন