ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

পাটুরিয়া-গোয়ালন্দে হবে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১:১০ পিএম, ০৭ জুন ২০১৮

পাটুরিয়া ও গোয়ালন্দ অবস্থানে ভবিষ্যতে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তিনি এ পরিকল্পনার কথা জানান।

সেতু-টানেলের বিষয় প্রস্তাবিত বাজেটে উপস্থাপন করতে গিয়ে মুহিত বলেন, দেশের পশ্চিমাঞ্চলে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করার জন্য ৬১টি সেতু নির্মাণ/পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ অর্ধেকের বেশি শেষ হয়েছে। চলমান আছে দ্বিতীয় কাঁচপুর, দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় গোমতী সেতু নির্মাণের কাজ।

‘গলাচিপা, পায়রা ও কচা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ এবং পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ অবস্থানে ভবিষ্যতে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা আছে। এছাড়া, নবম (বগা সেতু), দশম (মোংলা সেতু) ও একাদশ (ঝপঝপিয়া) বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণের জন্য চীন সরকারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে। তদুপরি, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি ২০২২ সাল নাগাদ এর কাজ সম্পন্ন করতে পারবো’ বলেন অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, যোগাযোগ ও পরিবহন খাতে চলমান কার্যক্রমসমূহের সময়ানুগ ও দক্ষ বাস্তবায়ন এবং বাস্তবায়নোত্তর মানোন্নয়ন এখন আমাদের মূল লক্ষ্য।

সড়ক ও মহাসড়কের বিষয়ে মুহিত বলেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ এক হাজার ১৪০ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ককে যথাযথ মানসম্পন্ন ও প্রশস্ত করার জন্য আমরা ১০টি সড়ক জোনভিত্তিক ১০টি গুচ্ছ প্রকল্প গ্রহণ করেছি। এর আওতায় পর্যায়ক্রমে সারাদেশের তিন হাজার ৮১৩ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ককে চার বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত করা হবে। ইতোমধ্যে ৪৬৫ কিলোমিটার সড়ক চার বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত হয়েছে। আরও ৪৩৬ কিলোমিটার সড়ককে উন্নীতকরণের কাজ চলছে।

‘দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সরাসরি চলাচলের সুযোগ তৈরির জন্য আমরা ঢাকা ইস্টওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছি। এটি এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। সড়ক নির্মাণের পাশাপাশি ক্ষতি রোধ করার ওপর আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাই। সে লক্ষ্যে, ২০২১ সালের মধ্যে দেশের মহাসড়ক নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ ২৮টি স্থানে এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন স্থাপন করা হবে’ বলন অর্থমন্ত্রী।

রেলখাতের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, পণ্য ও যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রে রেলওয়ে একটি সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব মাধ্যম। রেলখাতের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ইতিপূর্বে প্রণীত ২০ বছর মেয়াদি রেলওয়ে মহাপরিকল্পনা হালনাগাদ করা হয়েছে। ওই পরিকল্পনার আওতায় ২০৪৫ সাল পর্যন্ত বাস্তবায়নের জন্য ২৩০টি প্রকল্প চিহ্নিত করা হয়েছে।

নতুন অর্থবছরে ১২০ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণের কথা জানিয়ে মুহিত বলেন, রেলপথ সম্প্রসারণ, নতুন রেলপথ নির্মাণ ও সংস্কার, রেলপথকে ডুয়েলগেজে রূপান্তরকরণ, নতুন ও বন্ধ রেল স্টেশন চালু করা, নতুন ট্রেন চালু ও ট্রেনের সার্ভিস বৃদ্ধি করা, ট্রেনের কোচ সংগ্রহ ইত্যাদি কাজ অব্যাহত আছে। আগামী অর্থবছরে ১২০ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, ২২ কিলোমিটার রেললাইন পুনর্বাসন, দুই হাজার ৫৫০ কিলোমিটার রেলপথ রক্ষণাবেক্ষণ, ৫৫টি নতুন রেলসেতু নির্মাণ, ১৬টি স্টেশনের সিগন্যালিং ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, ৫০টি বিজি ও এমজি যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ ও ৪০টি ক্যারেজ পুনর্বাসন করতে চাই।

রেললাইনের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, কয়েক বছরের মধ্যে আরও ৩৯৫ কিলোমিটার নতুন রেললাইন, ৭৬ কিলোমিটার রেললাইন পুনর্বাসন ও ১৭৩টি নতুন রেলসেতু নির্মাণের পরিকল্পনা আছে আমাদের। বর্তমানে, যমুনা নদীর ওপর বিদ্যমান বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে ডুয়েলগেজ ডাবল ট্র্যাকসম্পন্ন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু’ নির্মাণের সম্ভাব্যতা জরিপের কাজ চলছে।

মোংলা বন্দরকে আধুনিক বন্দরে রূপান্তরের পদক্ষে নেয়া হয়েছে জানিয়ে মুহিত বলেন, দেশে মোট আমদানি ও রফতানি পণ্যের প্রায় ১০ শতাংশ মোংলা বন্দরের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়। অথচ ব্যবহারের অভাবে বিগত সরকারের আমলে বন্দরটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। বন্দরটিকে আধুনিক বন্দরে রূপান্তরের জন্য আমরা ক্যাপিটাল ড্রেজিং, কার্গো হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতি সংগ্রহসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি। ফলে বন্দরের ব্যবহার ও আয় বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ কাজে গতিশীলতা আনতে ইতোমধ্যে একে ফার্স্টট্র্যাক প্রকল্পভুক্ত করা হয়েছে।

এমএএস/বিএ

আরও পড়ুন