খাদ্যশস্য মজুদ ক্ষমতা ২৭ লাখ টনে উন্নীতের লক্ষ্য
খাদ্যশস্য মজুদ ক্ষমতা ২৭ লাখ টনে উন্নীত করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো দেশের সকল মানুষের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং আপদকালীন পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুদ রাখা। দেশে সরকারি পর্যায়ে খাদ্যশস্যের ধারণক্ষমতা বর্তমানে ২১ লাখ ২০ হাজার টন। ২০২০ সালের মধ্যে ধারণক্ষমতা ২৭ লাখ টনে উন্নীত করার জন্য আরও ছয় লাখ ৪০ হাজার টন ধারণক্ষমতার আধুনিক খাদ্য গুদাম বা সাইলো নির্মাণ করা হচ্ছে।’
‘এছাড়াও দুর্যোগকালীন এবং দুর্যোগ-পরবর্তী খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে আমরা দেশের আটটি কৌশলগত স্থানে মোট পাঁচ লাখ ৩৫ হাজার ৫০০ টন ধারণক্ষমতার আটটি আধুনিক স্টিল সাইলো নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্য সংরক্ষণের পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে শক্তিশালী করতে দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ এবং তাদের জন্য টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পরিবীক্ষণ সক্ষমতা বাড়ানো ও তথ্য-উপাত্ত ব্যবস্থাপনা উন্নয়নের জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তিভিত্তিক কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে।’
ভিজিডি কর্মসূচির মাধ্যমে চলমান পুষ্টিসমৃদ্ধ চাল বিতরণ কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে সকল উপজেলায় সম্প্রসারণ করা হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার বিবেচনায় ও এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নীতি-২০১৮-১৯ প্রণয়ন করা হচ্ছে। সিলেট ও মৌলভীবাজার অঞ্চলে মা, শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের জন্য চলমান পুষ্টি উন্নয়ন কার্যক্রম সফল হলে তা সারাদেশে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা আছে আমাদের।’
‘বন্যার কারণে অর্থবছরের প্রথম দিকে কৃষিখাতে উৎপাদন ব্যাহত হলেও ভর্তুকি, কৃষি উপকরণ সরবরাহ ও অন্যান্য সহায়ক কার্যক্রমের প্রভাবে আমন ও বোরোর উৎপাদন সন্তোষজনক হয়েছে। সার্বিকভাবে চলতি অর্থবছরে চার কোটি ৭০ লাখ টনের বেশি খাদ্যশস্য উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা আছে।’
দেশে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ক্রমশ কমছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তা সত্ত্বেও বিগত ১০ বছরে কৃষিখাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে গড়ে ৩ দমশকি ৮ শতাংশ। হেক্টরপ্রতি শস্য উৎপাদন বিগত ৯ বছরে ৩ হাজার ৭৬১ কেজি থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৪ হাজার ৬২৯ কেজিতে উন্নীত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মোট খাদ্যশস্য উৎপাদন ২০০৮-০৯ অর্থবছরের তিন কোটি ৪৭ লাখ ১০ হাজার টন থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তিন কোটি ৮৬ লাখ ৩৪ হাজার টন হয়েছে। সার্বিকভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত সাময়িক অসুবিধা ছাড়া কৃষিখাত অর্থনীতিতে অব্যাহতভাবে অবদান রেখে যাচ্ছে। চলমান কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগসহিষ্ণু জাতের ধান ও অন্যান্য শস্যের জাত উদ্ভাবনে গবেষণার সুযোগ ও পরিধি সম্প্রসারণ করার মাধ্যমে কৃষিখাতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা সম্ভব হবে।’
আরএমএম/বিএ