ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

স্বর্ণ আমদানির নীতিমালা অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:৩৭ পিএম, ২৩ মে ২০১৮

স্বর্ণ আমদানিতে বন্ড সুবিধা থাকছে। আমদানি করে দেশের ভেতর অলঙ্কার বানিয়ে তা বিদেশে রফতানি উন্মুক্ত করতে এ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এ ধরনের রফতানিকারকদের নগদ প্রণোদনাসহ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমিও বরাদ্দ দেয়া হবে। এ ছাড়া অলঙ্কার তৈরি করে যারা দেশের মানুষের কাছে বিক্রি করবে, তারাও আমদানি করা স্বর্ণ ব্যবহার করতে পারবে। বৈধ পথে ও আনুষ্ঠানিকভাবে স্বর্ণ আমদানির এসব বিধান রেখে ‘স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮’ এর নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়-সংক্রান্ত কমিটি।

বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে বাণিজ্যসচিব শুভাশীষ বসু সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

অনুমোদনের জন্য পাঠানো চূড়ান্ত খসড়া নীতিমালায় বলা হয়, অনুমোদিত ডিলার সরাসরি স্বর্ণের বার আমদানি করতে পারবে। তবে ডিলার স্বর্ণের বার ছাড়া কোনো স্বর্ণালঙ্কার বা অন্য কোনো ফর্মে স্বর্ণ আমদানি করতে পারবে না। স্বর্ণের বার আমদানির সময় ডিলার বন্ড সুবিধা নিতে পারবে। এসব ডিলার স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে স্বর্ণের বার বিক্রি করবে।

তবে স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান থেকে নেয়া চাহিদার বিপরীতে স্বর্ণের বার আমদানির আগে সম্ভাব্য কী পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হবে তা বাংলাদেশ ব্যাংককে জানিয়ে ওই ব্যয় পরিশোধের বিষয়ে অনাপত্তি নেবে। বৈদেশিক মুদ্রা বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অনাপত্তি বিষয়ে অবহিত করবে। স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুতকারীকে জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে এবং মূসক (মূল্য সংযোজন কর) নিবন্ধিত হতে হবে।

মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো চূড়ান্ত খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, অনুমোদিত ডিলার স্বর্ণের বার আমদানির সময় বন্ড সুবিধা গ্রহণ করে স্বর্ণ আমদানি করতে পারবে। সে ক্ষেত্রে স্বর্ণের বার আমদানি করার নিমিত্ত অনুমোদিত ডিলারকে আবশ্যিকভাবে আমদানি নীতি আদেশ এবং কাস্টমস অ্যাক্টের বিধানাবলি অনুসরণপূর্বক বন্ড লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, নিবন্ধিত বৈধ স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা স্বর্ণালঙ্কার রফতানিকারক সনদ নিতে পারবে। বৈধভাবে স্বর্ণালঙ্কার রফতানি উৎসাহিত করতে রফতানকিারকদের স্বর্ণালঙ্কার তৈরির কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে রেয়াতসহ বিভিন্ন প্রকারের প্রণোদনামূলক বিশেষ সহায়তা দেয়া হবে। স্বর্ণালঙ্কার রফতানির উদ্দেশ্যে আমদানি করা স্বর্ণের ক্ষেত্রে ডিউটি ড্র-ব্যাক ও বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা দেয়া হবে।

নীতিমালায় পুরনো স্বর্ণ কেনাবেচায় স্বচ্ছতা আনার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, গ্রাহকের কাছ হতে রিসাইকেল্ড (পুরনো) স্বর্ণ ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বিধানের লক্ষ্যে ওই গ্রাহক/বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্র/পাসপোর্টের কপি এবং পূর্ণাঙ্গ যোগাযোগের ঠিকানা সংরক্ষণ করতে হবে।

নীতিমালায় স্বর্ণের মান প্রণয়ন, যাচাই ও নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলা হয়েছে, সরকার স্বর্ণের জন্য নিজস্ব মান প্রণয়ন করবে। স্বর্ণের মান যাচাই ও বিশুদ্ধ স্বর্ণের পরিমাণ যাচাই নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ল্যাবটেস্ট, ফায়ার টেস্ট বা হলমার্ক টেস্ট সুবিধাসহ পরীক্ষাগার প্রতিষ্ঠা করবে। এই পরীক্ষাগারকে বাংলাদেশের অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড বা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে অ্যাক্রিডিটেশন গ্রহণ করতে হবে। স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কারের মান সুনিশ্চিত করার জন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে হলমার্ক ব্যবস্থা চালু করতে হবে। স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কার কেনাবেচার ক্ষেত্রে হলমার্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক হবে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিয়ম অনুযায়ী স্বর্ণ ও স্বর্ণালঙ্কারে খাদের পরিমাণ সুনির্দিষ্ট করতে হবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকে দেশের স্বর্ণ খাতসংশ্লিষ্ট একটি কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডার প্রতিষ্ঠা করা হবে। এতে বাৎসরিক চাহিদা, আমদানি, রফতানি, ক্রয়-বিক্রয়, দোকান সংখ্যা, রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ, বাজেয়াপ্তকৃত স্বর্ণের পরিমাণ, নিলামে স্বর্ণ বিক্রির পরিসংখ্যান ইত্যাদি বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

এমইউএইচ/জেএইচ/আরআইপি

আরও পড়ুন