বীমা-ওষুধের দাপট, ব্যাংক-প্রকৌশলে ধরা
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে (সোমবার) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দর বৃদ্ধিতে বীমা ও ওষুধ খাতের কোম্পানিগুলো দাপট দেখিয়েছে। তবে বেশিরভাগ ব্যাংক ও প্রকৌশল খাতের প্রতিষ্ঠানের দরপতনের কারণে উভয় বাজারে সবকটি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে।
এদিন সবকটি মূল্যসূচকের পতন ঘটলেও লেনদেনের বেশিরভাগ সময় তা ঊর্ধ্বমুখী ছিল। তবে শেষ ঘণ্টায় বাজার টানা নিম্নমুখী থাকে। মূলত একের পর এক ব্যাংক ও প্রকৌশল খাতের প্রতিষ্ঠানের দরপতনের প্রভাব অন্য খাতের ওপরে পড়ায় বাজার নিম্নমুখী হয়ে পড়ে। যার কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ে লেনদেনেও।
ফলে দিন শেষে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুা কম হয়েছে। সেই সঙ্গে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৩০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ১৫২টির; আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৪টির দাম।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৮০৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুটি মূল্যসূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৭৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৪৮ পয়েন্টে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ারবাজারের বিভিন্ন খাতের মধ্যে বীমা ও বস্ত্র খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানির সংখ্যা বেশি। কিন্তু এই খাতের কোম্পানিগুলোর বাজার মূলধন তুলনামূলক কম। যে কারণে বেশি সংখ্যক কোম্পানি নিয়েও বীমা খাত মূল্যসূচকের উত্থান বা পতনে বড় ভূমিকা রাখতে পারে না।
অপরদিকে ব্যাংক খাতের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কম হলেও এ খাতের বাজার মূলধন অনেক বেশি। যে কারণে সূচকের ঊত্থান-পতনে ব্যাংক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, সোমবার ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৬টি ব্যাংকের শেয়ারের দাম কমেছে। বিপরীতে দাম বেড়েছে ৮টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৬টি ব্যাংকের শেয়ারের দাম। অপরদিকে তালিকাভুক্ত ৩৬টি প্রকৌশল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৮টির শেয়ারের দাম কমেছে। বিপরীতে দাম বেড়েছে ১৫টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩টির দাম।
এদিন শেয়ারের দাম বাড়ার তালিকায় শীর্ষে থাকা বীমা খাতের কোম্পানির সংখ্যা ২৯টি। বিপরীতে দাম কমেছে ১২টি বীমার। আর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে ৫টির এবং একটির শেয়ার লেনদেন হয়নি।
এছাড়া আজ ওষুধ খাতের ১৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯টির এবং ৩টির অপরিবর্তিত রয়েছে দাম।
বীমা ও ওষুধ খাতের কোম্পানিগুলোর এমন দাপটের মধ্যেও ব্যাংক ও প্রকৌশল খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের কারণে লেনদেনে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৮৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ৪৯২ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের দিনের তুলনায় ৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকার শেয়ার কম লেনদেন হয়েছে ।
টাকার অংকে বাজারটিতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ৩০ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক।
লেনদেনে এরপর রয়েছে- গ্রামীণ ফোন, ওসমানিয়া গ্লাস, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, রূপালী লাইফ এবং স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যাল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক সিএসসিএক্স ৪৯ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৭৭৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার শেয়ার। লেনদেন হওয়া ২৩৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের মধ্যে ৮২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩১টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।
এমএএস/এমএমজেড/এমএস