ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

খেলাপি ঋণ কমাতে আইন সংস্কারের তাগিদ আইএমএফের

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১:৫৩ পিএম, ০৮ মার্চ ২০১৮

অর্থপাচার এবং ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। একই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণহীন খেলাপি ঋণ কমাতে আইন সংস্কারের তাগিদ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এই সংস্থা।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি এসব কথা জানায়। এ সয়ম ব্যাংকিং খাতের নানা অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধে সুশাসন, জবাবদিহিতা, অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদারে বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও শক্ত ভূমিকা রাখার আহ্বন জানিয়েছে আইএমএফ।

বৈদেশিক লেনদেনে ভারসাম্য রক্ষায় আইএমএফ ২০১১ সালে বর্ধিত ঋণ সহায়তা (ইসিএফ) কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশকে মোট ৯৮ কোটি ৭০ লাখ ডলার দেয়। এ ঋণ কর্মসূচির সফল সমাপ্তি হয়েছে সম্প্রতি। ওই কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে বেশকিছু শর্ত দিয়েছিল আইএমএফ। সেসব শর্ত যাচাইয়ে সংস্থাটির আবাসিক প্রধান ডাইসাকু কিহারার নেতৃত্বে একটি টিম বাংলাদেশ আসে। সফরকালে প্রতিনিধি দলটি বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে বৈঠক করে। ৮ দিনের সফর শেষে তাদের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন করে সংস্থাটি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সংস্থাটি জানায়, ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ বাড়ছে। এই সমস্যা দূর করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। ব্যাংকের ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং কর্পোরেট গভর্ন্যান্সের উন্নয়ন করতে হবে। এছাড়া ব্যাংকিং খাতের বড় সমস্যা খেলাপি ঋণ কমাতে আইনি সংস্কার প্রয়োজন।

আইএমএফের ইসিএফ ঋণের অন্যতম শর্ত ছিল নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করা। সেটা দু’বছর পিছিয়ে যাওয়াকে তিনি কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে ডাইসাকু কিহারা বলেন, বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় এখানকার কর জিডিপি রেশিও অনেক কম। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়িত হলে দু’য়ের মধ্যে পার্থক্য কমবে। তবে ইসিএফের সময়সীমা শেষ হয়ে যাওয়ায় এক্ষেত্রে কোনো প্রভাব নেই।

তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাত ও পুঁজিবাজার উন্নয়নের মাধ্যমে আর্থিক খাতকে আরও সুসংহত করতে হবে। দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক বিশেষত রাষ্ট্রীয় মালিকানার কয়েকটি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ও উচ্চ খেলাপি ঋণ রয়েছে। এটা কমানোর জন্য কাজ করতে হবে।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সম্প্রদায় বাংলাদেশের বাজেটের ওপর এক ধরনের চাপ তৈরি করেছে। এ চাপ প্রশমনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়গুলোর সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে হবে।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক অব্যাহতভাবে ডলার সহায়তা দিচ্ছে। এতে করে এখানকার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চাপে পড়বে কিনা এরকম প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে আমদানি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ মূলধনী যন্ত্রপাতি এবং শিল্পে ব্যবহারিত কাঁচামাল। এর প্রভাবে সামনের দিনে রফতানি বৃদ্ধি পাবে। ফলে দীর্ঘ মেয়াদে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না।

নতুন ৯টি ব্যাংক নিয়ে নানা অস্থিরতার মধ্যে নতুন করে আরও কয়েকটি ব্যাংক দেয়ার বিষয়ে সরকারি উদ্যোগকে আইএমএফ কীভাবে দেখছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন ব্যাংক দেয়া না দেয়া সরকারের নীতিগত বিষয়। তবে সব ব্যাংকের ক্ষেত্রে সমানভাবে আইন বাস্তবায়নের ওপর জোর দিতে হবে। বাংলাদেশের যেসব আইন রয়েছে তা যেন যথাযথভাবে পরিপালন করে ব্যাংক দেয়া হয় সে বিষয়ে জোর দিতে হবে।

এসআই/বিএ