ব্যাংকে স্কুল শিক্ষার্থীদের সঞ্চয় ১৩শ’ কোটি টাকা
ব্যাংকে বেড়েই চলছে খুদে শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের পরিমাণ। স্কুল ব্যাংকিংয়ের আওতায় শিক্ষার্থীরা ব্যাংক হিসাব খুলেছে ১৪ লাখ ৫৩ হাজর ৯৩৬টি। এসব হিসাবে সঞ্চয় হয়েছে ১ হাজার ৩৬২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিসেম্বর ২০১৭ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক স্কুল শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের অভ্যাসে উৎসাহিত করতে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। মাত্র ১০০ টাকা জমা করে নিজের নামে হিসাব খুলতে পারছেন শিক্ষার্থীরা। এতে করে যেমন উপকৃত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা, তেমনি বাণিজ্যিক ব্যাংকেরও আমানতের পাল্লা ভারী হচ্ছে। এছাড়া ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের সঞ্চিত টাকা বিনিয়োগ হয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশের ৫৭টি বাণিজ্যিক ব্যাংকে স্কুল ব্যাংকিংয়ের আওতায় ১৪ লাখ ৫৩ হাজর ৯৩৬টি হিসাব খোলেছে শিক্ষার্থীরা। এসব হিসাবের বিপরীতে সঞ্চয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৬২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে শহরের স্কুলের শিক্ষার্থীদের খোলা ৮ লাখ ৮৯ হাজার ২৯টি অ্যাকাউন্টে জমা ৯৪৪ কোটি ২০ লাখ টাকা। আর গ্রামের শিক্ষার্থীদের ৫ লাখ ৬৪ হাজার ৯০৭টি অ্যাকাউন্টে জমা ৪১৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর হিসাব সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৮৮ হাজার ৯৫৬টি। আর এসব হিসাবে মোট স্থিতি ১ হাজার ১০৭ কোটি ৩১ লাখ টাকা। রাষ্ট্রীয় মালিকানার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে চার লাখ ২৪ হাজার ৩৩০টি হিসাব খোলা হয়েছে। এসব হিসাবের বিপরীতে সঞ্চয় দাঁড়িয়েছে ১৬৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।
আলোচিত সময়ে সবচেয়ে বেশি হিসাব খোলা হয়েছে ইসলামী ব্যাংকে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৩৯৮টি। যা মোট হিসাবের ১৬ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এরপরে অগ্রণী ব্যাংকের ১ লাখ ৮৬ হাজার ৫৩৬টি হিসাব রয়েছে। পর্যায়ক্রমে ডাচ-বাংলা ১ লাখ ৭১ হাজার ৩৬২টি, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকে ১ লাখ ১ হাজার ৩০১টি এবং উত্তরা ব্যাংকে ৮৪ হাজার ১০৮টি হিসাব রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্টের মহাব্যবস্থাপক মো. আবুল বশর বলেন, শিক্ষার্থীদের ব্যাংকমুখী করে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম ছড়িয়ে দিতে বিভিন্ন সময় প্রচারণামূলক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সঞ্চয়ের মনোভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০১০ সালে সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করতে ‘স্কুল ব্যাংকিং’ কার্যক্রম শুরু হলেও শিক্ষার্থীরা টাকা জমা রাখার সুযোগ পায় ২০১১ সালে। এদিকে স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমের মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের মধ্যে আর্থিক সেবা পৌঁছে দেয়ার স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৫ সালে 'চাইল্ড অ্যান্ড ইউথ ফাইন্যান্স ইন্টারন্যাশনালের' (সিওয়াইএফআই) 'কান্ট্রি অ্যাওয়ার্ড' পুরস্কারে ভূষিত হয় বাংলাদেশ।
এসআই/এমবিআর/আরআইপি