ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

বাংলাদেশ চাইলে রোহিঙ্গাদের সহায়তা দেবে এডিবি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:০৭ এএম, ০১ মার্চ ২০১৮

বাংলাদেশ সরকার চাইলে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের সহায়তা দিতেও প্রস্তুত রয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তাছাড়া দ্বিতীয় পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী এই সংস্থাটি। ম্যানিলাভিত্তিক উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা এডিবির প্রেসিডেন্ট তাকিহিকো নাকাওয়ের বাংলাদেশ সফর উপলক্ষে বুধবার ঢাকাস্থ এডিবির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এ সময় তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রসংশা করেন।

বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এডিবি প্রেসিডেন্ট বলেন, বাংলাদেশের জিডিপি বাড়াতে এডিবি অবকাঠামো খাতে, বিশেষ করে জ্বালানি-বিদ্যুৎ, যোগাযোগ এবং নগর উন্নয়নে সহায়তা অব্যাহত রাখবে। এর পাশাপাশি বেসরকারি খাতের উন্নয়ন এবং বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) বাড়তেও প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতেও এডিবি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের প্রসংশা করে তিনি বলেন, গত অক্টোবরের পর থেকে বাংলাদেশ প্রায় ৬ লাখ ৮৮ হাজার রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার যদি সহায়তা চায় সেক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা করতে এডিবি প্রস্তুত।

ঢাকা সফরকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক বৈঠকে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী দ্বিতীয় পদ্মা সেতুতে আমাদের অর্থায়ন করতে বলেছেন। আমরা সেখানে বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত আছি। সরকার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিলে অবশ্যই আমরা সেটা বিবেচনা করব।

প্রকল্পটির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রেও এডিবি সহায়তা করতে পারে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল মেয়াদে এই পাঁচ বছরে বাংলাদেশকে ৮শ কোটি ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি রয়েছে এডিবির। এই অর্থ আগের পাঁচ বছরে (২০১১-১৫) দেয়া সহায়তার চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি। যদি প্রয়োজন হয় এর বাইরেও বাংলাদেশকে আমরা অতিরিক্ত অর্থ সহায়তা দেব। সেটা চলমান প্রকল্প এবং নতুন প্রকল্পেও হতে পারে। এছাড়া সরকার যে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেখানে এডিবি বিনিয়োগে প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান তিনি।

গত এক দশকে বাংলাদেশের অসাধারণ অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রসংশা করে তিনি বলেন, এ সময়কালে গড়ে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। গেল বছর ৭ দশমিক ৩ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। এর মাধ্যমেই ২০১৫ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। ২০০০ সালে ৪৯ ভাগ দরিদ্র্য হার থেকে ২০১৬ সালে ২৪ ভাগে নেমে এসেছে।

তিনি উল্লেখ করেন, সরকারের সুষ্ঠু অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বাংলাদেশ অর্থনীতির মূল গতিপথেই রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। এটি অনেক কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। বাংলাদেশের যে জনসংখ্যা তাতে এ লক্ষ্য অর্জনে প্রতিবছর গড়ে ৮ শতাংশের উপরে প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। তাছাড় লক্ষ্য অর্জনে ভালো বিনিয়োগ প্রয়োজন। সেই সঙ্গে সুষ্ঠু ব্যবসায়িক পরিবেশও প্রয়োজন। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ৯০ এর দশকে জনসংখ্যাবহুল চীন গড়ে ১০ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করে আজ এই পর্যায়ে এসেছে।

সফরকালে তিনি এডিবির সহায়তাপুষ্ট বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন করেন। এগুলোর মধ্যে আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ প্রকল্প, ভৈরবের মাধ্যমিক স্কুল, নরসিংদীর নগর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এবং ঢাক-চট্টগ্রাম রেল ব্যবস্থার উন্নয়নের প্রকল্প পরিদর্শন করেন। ১৯৭৩ সালে এডিবির সদস্য দেশ হওয়ার পর এ পর্যন্ত এডিবি বাংলাদেশকে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অনুকূলে ঋণ, অনুদান ও কারিগরি সহায়তা বাবদ প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার সহায়া দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এডিবির মহাপরিচালক (দক্ষিণ এশীয়) হুন কিম, এডিবি সভাপতির প্রধান উপদেষ্টা ইয়োচিরো ইকিদা, বাংলাদেশে নিযুক্ত আবাসিক প্রতিনিধি মনমোহন প্রকাশ প্রমুখ।

এমএ/বিএ