এডিআর নিয়ে অহেতুক প্যানিক : গভর্নর
ব্যাংক খাতে কোনো তারল্য সংকট নেই উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন, ঋণ আমানত অনুপাত (এডিআর) নিয়ে ব্যাংক খাতে অহেতুক প্যানিক দেখা দিয়েছে।
তিনি জানান, এডিআর কমানোর কারণে এখন সামগ্রিক ব্যাংক খাতে ১১ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ঋণ আছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক এবং ফার্মাস ব্যাংকের আছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা।
শনিবার রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে অগ্রণী ব্যাংকের বার্ষিক ব্যবসায়িক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এডিআর কমানোর কারণে ব্যাংক খাতে ‘প্যানিক’ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, এ শব্দটি কেন যেন ব্যাংক সেক্টরে চলে এসেছে। এর কোনো কারণ আমি দেখছি না। এটি অত্যন্ত অমূলক আশঙ্কা।
তিনি বলেন, ‘ঋণ আমানত অনুপাতের (এডিআর) বিষয়ে আগে বলা হয়েছিল সিআরআর (নগদ জমা সংরক্ষণ) ও এসএলআর (বিধিবদ্ধ জমা সংরক্ষণ) বাদ দিয়ে যে ৮০.৫ শতাংশ থাকে তার থেকে ব্যাংক নিজস্ব সিদ্ধান্তে ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত যেতে পারে। এখন আমরা বলছি ব্যাংক ৮০.৫ শতাংশ থেকে আর ৩ শতাংশ বৃদ্ধি করতে পারে। অর্থাৎ ৮৩.৫ শতাংশ। আমাদের ৫৭টি ব্যাংকের মধ্যে ৩৮টি ব্যাংক এর নিচেই আছে’।
এডিআর কমানোর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, অনেক বেসরকারি ব্যাংক অ্যাগ্রেসিভ ল্যান্ডিং (ঋণ প্রদান) করছিল এবং ন্যূনতম পরিমাণ ক্রেডিট ছিল না। এ জন্য অ্যাডজাস্টমেন্ট করেছি। যাতে করে একটি ক্রেডিট ডিসিপ্লিনারিতে আসা যায়।
গভর্নর বলেন, সম্প্রতি আমরা খেয়াল করছি ডিপোজিট রেট (আমানতের সুদ হার) বাড়ছে। যাদের ডিপোজিট আছে, এটি তাদের জন্য খুবই সুখবর। কারণ ডিপোজিট রেট দীর্ঘদিন ছিল নেগেটিভ। তাই ডিপোজিটররা এখন ভালো রেট পাচ্ছেন, এতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। তবে এর ফলে ল্যান্ডিং রেটটা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেটা ব্যবসা বা দেশের জন্য ভালো না।
বেসরকারি ব্যাংকগুলো তথ্য লুকাচ্ছে উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, এডিআর ৮৩.৫ শতাংশ হওয়ায় তারা বলছে ডিপোজিট অনেক বেশি ফল (হ্রাস) করছে। ‘ডিপোজিট অনেক বেশি বাড়াতে হবে রেশিও ঠিক করার জন্য, সেটাও ঠিক নয়। কারণ ১১ হাজার কোটি টাকার মতো এডি রেশিওর উপরে আছে। তাদের মধ্যে কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক এবং ফার্মাস ব্যাংক এ চারটি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা’ বলেন গভর্নর।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমে ব্যাংকাররা বলছেন আমাদের অনেক বেশি ডিপোজিট আনতে হবে, ডিপোজিট রেশিও ঠিক করার জন্য- এটা মোটেই ঠিক না। চার ব্যাংক বাদ দিলে সমগ্র ব্যাংক খাতে অতিরিক্ত দাঁড়াচ্ছে ৫ হাজার কোটি টাকার মতো।
এমএএস/এমএমজেড/আরআইপি