ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রসারে সমন্বিত নীতিমালা জরুরি
কয়েক বছর ধরেই নতুন উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নে ভেঞ্চার ক্যাপিটালের বিষয়টি বাংলাদেশে আলোচনা চলছে। এরই মধ্যে একটি আইনও সরকার অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু সমন্বয়হীনতার কারণে নতুন উদ্যোগের বিকল্প অর্থায়নের এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়নি। এ কারণে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রসারে সমন্বিত নীতিমালা প্রয়োজন। যা আগামী দিনে মধ্য আয়ের বেকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।
বৃহস্পতিবার মিরপুরে বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে 'ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফাইন্যান্সিং ইন বাংলাদেশ : অ্যান এক্সপ্লোরেশন' শীর্ষক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সেঞ্জ কমিশনের কমিশনার ড. স্বপন কুমার বালা। বিআইবিএমের সুপার নিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী, সুপার নিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি, বিডি ভেঞ্চার লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এহসানুল হক এবং মসলিন ক্যাপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়ালী উল মারুফ মতিন।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের অধ্যাপক এবং পরিচালক ( প্রশিক্ষণ) ড. শাহ মো. আহসান হাবিবের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, এসএমই এবং পরিবেশবান্ধব ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রসারে ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে।
ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ক্ষেত্রে বেশকিছু বাধা রয়েছে। এসব বাধা একসঙ্গে দূর করা সম্ভব নয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে এসব বাধা কমিয়ে আনার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করছে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল তহবিলের সঙ্গে জড়িতদের সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
অনেক দেশে ভিসিএফ (ভেঞ্চার ক্যাপিটাল) সংস্থাগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং আর্থিক অথরিটির কাছে পাঠানোর প্রয়োজন হয় না। অন্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেনের তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানো হয় না বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিআইবিএমের সুপার নিউমারারি অধ্যাপক এবং পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, নতুন উদ্যোক্তাদের সহজ আমানত দেয়ার ক্ষমতা নেই। কিন্তু আইটি এবং পর্যটন খাতে এসব উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তা দিতে হবে যাতে তাদের উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন হয়। এতে আর্থিক অর্ন্তভুক্তি বেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, ভেঞ্চার ক্যাপিটালের মার্কেটের উন্নয়নে অনভিজ্ঞদের অভিজ্ঞ করে তুলতে হবে। তা না হলে এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হবে না। এ খাতের উচ্চ ঝুঁকির বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। এসডিজি অর্জনে ভূমিকা রাখবে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল।
বিআইবিএমের সুপার নিউমারারি অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ইয়াছিন আলী বলেন, নতুন আইডিয়াই হচ্ছে একটা ভেঞ্চার ক্যাপিটাল। ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ফান্ডে সহযোগী হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ভূমিকা পালন করতে হবে। সিকিউরিটি একচেঞ্জ কমিশনকে এক্ষেত্রে সক্রিয় হতে হবে।
বিডি ভেঞ্চারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাখাওয়াত হোসেন বলেন, যেকোনো উদ্যোগের ক্ষেত্রে ঝুঁকি থাকবে। পোর্টফোলিও দেখে সেটা নির্দিষ্ট করতে হবে। ভেঞ্চার ক্যাপিটালের ঝুঁকিগুলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানসম্মত অডিট রিপোর্ট না পাওয়াসহ অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সেঞ্জ কমিশনের কমিশনার ড. স্বপন কুমার বালা বলেন, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ফান্ড দুটোই আলাদা বিষয়। এ বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা রাখা উচিত। ভেঞ্চার ক্যাপিটালের স্বচ্ছ এবং পরিষ্কার নীতিমালা প্রয়োজন।
এমইউএইচ/এসআই/বিএ