অব্যবস্থাপনা : দুই কেন্দ্রের পরীক্ষা ফের ২০ জানুয়ারি
রাষ্ট্রায়ত্ত আট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ পরীক্ষায় ঢাকার দুটি কেন্দ্রের সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি চাকরিপ্রার্থী আসন স্বল্পতার কারণে পরীক্ষা দিতে পারেননি। এতে করে হট্টগোল হয়েছে। পরে এই দুই কেন্দ্রের পরীক্ষার নতুন তারিখ ঠিক করা হয়েছে আগামী ২০ জানুয়ারি।
এ বিষয়ে ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব বাংলাদেশ ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক মো. মোশাররফ হোসেন খান জাগো নিউজকে বলেন, রাজধানীর মিরপুর বাংলা কলেজ কেন্দ্র এবং মিরপুর শাহ আলী মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পাঁচ হাজার ছয়শ’ চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষা দিতে পারেনি।
তিনি বলেন, ওই এলাকায় রাস্তায় সমস্যার কারণে পরীক্ষার্থীরা ঠিকসময়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেনি। এজন্য কিছুটা অব্যবস্থাপনা হয়েছে। এতে যেমন আমরা দায়ী আবার সিটি কর্পোরেশনও দায়ী।
মিরপুরের এই দুই কেন্দ্রে যারা পরীক্ষা দিতে পারেনি তাদের বিষয়ে মোশাররফ হোসেন খান বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্যাংকার্স রিক্রুটমেন্ট কমিটির জরুরি বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী ২০ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৪টায় একই কেন্দ্রে তাদের পরীক্ষা নেয়া হবে। এই সিদ্ধান্ত অন্য কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না।
রাষ্ট্রায়ত্ত আট ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সিনিয়র অফিসার, অফিসার ও ক্যাশ অফিসার পদে নিয়োগের এই সমন্বিত নিয়োগ পরীক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগকে।
এক রিট আবেদনে এ পরীক্ষা হওয়া নিয়ে সংশয় তৈরি হলেও শেষ মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালতের আদেশে এই নিয়োগ পরীক্ষার পথ তৈরি হয় বৃহস্পতিবার। আগের ঘোষণা অনুযায়ীই শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সিনিয়র অফিসার পদে পরীক্ষা চলে। এক ঘণ্টায় ১০০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে আট প্রতিষ্ঠানে মোট এক হাজার ৬৬৩টি শূন্য পদে নিয়োগ দেয়ার কথা রয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে পরীক্ষা চলার মধ্যেই মিরপুরে দুই কলেজে ঝামেলা হওয়ার খবর আসে। বসার ব্যবস্থা নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে পরীক্ষা না দিয়েই বেরিয়ে যান চাকরিপ্রার্থীরা। মিরপুরের এই কেন্দ্রে বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের খবরও পাওয়া যায়।
মিরপুর আদর্শ হাইস্কুল কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তৌহিদুর রহমান। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এ পর্যন্ত যতোগুলো পরীক্ষা দিয়েছি তার মধ্যে এবারের মতো চরম অব্যবস্থাপনা আর কখোনোই হয়নি। হলগুলোতে প্রচণ্ড বিশৃঙ্খলা ছিল। পরীক্ষার হলে কোনো সিট সিরিয়াল করা হয়নি। যে যার মতো পরীক্ষার হলে বসেছে। অন্যন্যা পরীক্ষায় রোল বা রেজিস্ট্রেশন দেখে আমরা হলের আসনে বসতাম। এবার তা মানা হয়নি।
এ বিষয়ে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা শরিফুল হাসান তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘রীতিমতো প্রহসন। কেন্দ্রগুলোতে সিটপ্লান নেই। যে যার মতো বসেছে। বসতে না পেরে অনেক জায়গায় মারামারি। সাড়ে ৩টার পরীক্ষা অথচ পৌনে ৪টাতেও প্রশ্ন যায়নি। মোবাইল নিয়ে অনেকে পরীক্ষার হলে গেছে। যে যার মতো ছবি তুলছে। দুইজনের বেঞ্চে পাঁচজন। সিট না পেয়ে অনেকে লাইব্রেরিতে বসে আছে। এক বেঞ্চে ছয় সাতজন বসে আলাপ করতে করতে পরীক্ষা দিয়েছে।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘এমন আরও অভিযোগ পাচ্ছি আজকের আট ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার নিয়োগ পরীক্ষায়। দুই লাখ ছেলেমেয়ে এসেছে পরীক্ষা দিতে। হাজার হাজার ছেলেমেয়ে এসেছে ঢাকার বাইরে থেকে। বহুজন কান্নাকাটি করছে। মিরপুরের শাহ আলী মহিলা কলেজে যত সিট পরীক্ষার্থী বহুগুণ। সেখানে ছেলেমেয়েরা নাকি পরীক্ষাই দিতে পারেনি।’
এসআই/জেডএ/আইআই