সকালে নীরব বিকেলে সরব
তীব্র শৈতপ্রবাহের কারণে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় সকালের দিকে দর্শনার্থী কম থাকছে। অনেকটা নীরবেই পার হচ্ছে দুপুর কিন্তু বিকাল নাগাদ সরব হয়ে উঠছে মেলা প্রাঙ্গণ। গতকাল ছিল বাণিজ্য মেলার নবম দিন।
গত দুদিন প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়ায় ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি তেমন দেখা না গেলেও গতকাল বিকালের পর সরব হয়ে ওঠে বাণিজ্য মেলা। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সকালে মেলায় দর্শনার্থীর উপস্থিতি কম থাকলেও বিকালের পর বাড়তে থাকে। সকাল ১০টায় মেলার ফটক উন্মুক্তের পর দুপুর পর্যন্ত মেলা প্রাঙ্গণে ক্রেতা-দর্শনার্থীর পদচারণা খুব একটা চোখে পড়েনি। হাতেগোনা কিছু সংখ্যক দর্শনার্থীকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায় এক স্টল থেকে আরেক স্টলে। দুপুর গড়িয়ে বিকাল এলে ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে দর্শনার্থীর সংখ্যা। দুপুরের দিকে যারা এসেছেন তারা স্বস্তিতে কেনাকাটা করতে পারছেন।
দর্শনার্থীদের কেনাকাটার চেয়ে পণ্যের মান ও দর যাচাই করতে বেশি দেখা যায়। মেলায় যেসব স্টলে ছাড় দেয়া হয়েছে সেখানে ভিড় অন্য স্টলগুলোর তুলনায় বেশি।
স্টল সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাসব্যাপী মেলার শেষার্ধে দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের উপস্থিতি বাড়বে। মেলার প্রথম দিকের ব্যবসায়িক ক্ষতি সেসময় পূরণ করা যাবে।
আবুল হোটেলের বিক্রয়কর্মী শরিফ বলেন, গত শুক্র ও শনিবার ছুটির দিন হওয়ায় অনেক মানুষ মেলায় এসেছিল। শৈতপ্রবাহ শুরু হওয়ায় পরের দুদিন একেবারে দর্শকশূন্য হয়ে পড়ে মেলা প্রাঙ্গণ। আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একই চিত্র ছিল। কিন্তু বিকাল থেকে ক্রেতা-দর্শনার্থীর উপস্থিতি বাড়তে থাকে।
গতকাল দুপুরের দিকে মেলা প্রাঙ্গণে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন কলেজপড়ুয়া কিছু তরুণ-তরুণী। ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন স্টলের পণ্য দেখা, সেলফি তোলা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন তারা। একপার্যায়ে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়নে ঢু মারেন তারা। এছাড়া তথ্য কেন্দ্রের আশপাশে ছবি তোলা ও আড্ডা দিতে দেখা যায় কিছু দর্শনার্থীকে।
যারা কেনাকাটা করছিলেন, তারা বেশ স্বস্তিতে ছিলেন। দর্শনার্থী আফতাবুজ্জামান বলেন, এখন লোকজন নেই। তাই কেনাকাটায় স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে।
সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়লে ক্রেতা খুঁজে পায় স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলো। বিছানার চাদর, কুশন কভার, পর্দার স্টলগুলোতে ডিসকাউন্ট ও বিভিন্ন প্যাকেজের অফার দিয়ে ক্রেতাদের ধরে রাখার চেষ্টা ছিল বিক্রেতাদের। এ সময় ক্রেতাসমাগম ভালো থাকলেও বিক্রেতারা বলছেন, অনেকেই শুধু পণ্য দেখার জন্য আসছেন, কেনাকাটা সেভাবে জমে ওঠেনি।
অন্যদিকে বড় স্টলগুলোতে প্রথম থেকে বিক্রি বেশ ভালো। এসব স্টলে গৃহস্থালি সামগ্রী, শীতের পোশাক, ইলেকট্রিক সামগ্রী, শিশু ও নারীদের পণ্যের কাটতি ছিল বেশ।
বাণিজ্য মেলার ৪৬ নম্বর প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়নে গৃহস্থালি সামগ্রী বিক্রি করছে টপার। প্যাভিলিয়টিতে গিয়ে দেখা যায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়।
প্যাভিলিয়টির ইনচার্জ মো. সিরাজুল গনী বলেন, টপারের সব পণ্যে ১০ শতাংশ ছাড় রয়েছে। শুরু থেকে আমাদের বিক্রি বেশ ভালো।
প্রাণ প্যাভিলিয়ন থেকে ১১ আইটেমের একটি প্যাকেজ ৩৫০ টাকা দিয়ে ক্রয় করেন মোহাম্মদপুরের আলেয়া বেগম। মূলছাড় পেয়ে বেশ খুশি তিনি। বলেন, ৪৬৯ টাকার পণ্য ৩৫০ তে পেয়েছি। প্রায় ১০০ টাকা সেভ। বিষয়টি বেশ স্বস্তিদায়ক।
এমএ/এমএআর/জেএইচ/আইআই