মেলায় চাকরির পাশাপাশি মিলছে অভিজ্ঞতাও
বাণিজ্য মেলা এখন শুধু বাণিজ্য কিংবা বিনোদনের কেন্দ্র নয়। কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি করেছে এ মেলা। খণ্ডকালীন হলেও বাণিজ্য মেলায় কর্মসংস্থানে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
মেলায় এক মাসের জন্য চুক্তিভিত্তিক কাজ করছেন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন স্টল-প্যাভিলিয়ন থেকে শুরু করে নানান দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন তারা। এ কাজের বিনিময়ে সম্মানীর পাশাপাশি অভিজ্ঞতাও অর্জিত হচ্ছে তাদের।
এবারের বাণিজ্য মেলায় মোট ৫৮৯টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এসব স্টল ও প্যাভিলিয়নে প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী খণ্ডকালীন কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। মেলা ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেলায় বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে চুক্তি অনুযায়ী একজন শিক্ষার্থী দৈনিক হিসেবে ৫০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত আয় করছেন।
কাজ করার সুযোগ পেয়ে তারাও বেশ খুশি। পড়াশোনার পাশাপাশি কাজেরও অভিজ্ঞতা পাওয়া যাচ্ছে। এ অভিজ্ঞতা বাস্তব জীবন কিংবা চাকরির ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও কাজে দেবে- বলেন এক বিক্রয় প্রতিনিধি।
শনিবার সরেজমিন মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত ড্রেস পরিহিত খণ্ডকালীন কর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। ‘স্যার আমাদের এ জিনিসটা দেখুন’; ‘এটা আপনার জন্য ভালো হবে’; ‘আসুন আমাদের স্টলে’- এভাবে তারা ক্রেতা-দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
মেলায় ‘ফ্যাশন জুয়েলারি’তে বিক্রয়কর্মীর দায়িত্ব পালন করছেন ইতি ইসলাম ফাতেমা। পড়াশোনা করছেন মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউশনে, বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষে। তিনি বলেন, গত বছরও মেলায় কাজ করেছি। আমার বেশ ভালো লাগে। নানা ধরনের মানুষের সঙ্গে পরিচয় হওয়া যায়, কথা হয়। মানুষের সঙ্গে মেশা যায়। এক মাস দেখতে দেখতেই কেটে যায়। খুব উপভোগ করি সময়টা।
‘এখানে কাজের অভিজ্ঞতা পরবর্তী চাকরির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে, কারণ আমি বিবিএতে পড়ছি’- যোগ করেন তিনি।
দক্ষিণ খান সরদার সুজন মহিলা কলেজের বাণিজ্য বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস পিংকি বলেন, শিক্ষা জীবনের শেষে চাকরিতে প্রবেশ করলে এ অভিজ্ঞতা অনেক কাজে দেবে। সে চিন্তা থেকে কাজে এসেছি। বন্ধুদের অনেকেই আছেন এখানে। আবার পড়াশোনার খরচ চালাতেও কাজটি বেশ। একসঙ্গে অনেকগুলো টাকা পাওয়া যায়।
মেলায় খণ্ডকালীন চাকরি প্রসঙ্গে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের হেড অফ ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট আদিল খান বলেন, বাণিজ্য মেলা শুধু মেলা বা বাণিজ্য নয়। এটা এক ধরনের জব ক্রিয়েশনের ক্ষেত্র। প্রতি বছর আমাদের প্রতিষ্ঠান অনেক ছেলে-মেয়ের খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ দিয়ে থাকে। এবারও কাজের সুযোগ দেয়া হয়েছে। এজন্য তাদের প্রশিক্ষণও দেয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, এ মেলায় যেসব ছেলে-মেয়ে ভালো পারফরমেন্স দেখাবে, আমরা তাদের পরবর্তীতে বিভিন্ন পদে নিয়মিত কাজের সুযোগ দেব। সুতরাং এটা শুধু খণ্ডকালীন চাকরি- সেটা বলা যাবে না।
মেলায় আরএফএলের প্রিমিয়ার স্টল ৪৬-এর ইনচার্জ সিরাজুল গনি মঞ্জু জানান, তাদের স্টলের অধিকাংশ বিক্রয়কর্মীকে এক মাসের জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেকেই ছাত্র। তারাও মেলায় দায়িত্ব পেয়ে আনন্দিত।
জানা গেছে, এবারের মেলায় বেঙ্গল গ্রুপ ৫০ জন, কোকোলা ফুড প্রোডাক্ট ৩০ জন, লাভা ইন্টারন্যাশনাল ২০ জন শিক্ষার্থীকে কাজের সুযোগ দিয়েছে। এছাড়া প্রায় সব প্যাভিলিয়ন ও স্টলে কম-বেশি শিক্ষার্থীরা কাজের সুযোগ পেয়েছেন।
এমইউএইচ/এসআর/এমএআর/জেআইএম