ডিসেম্বরেই কার্গো নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করছে যুক্তরাজ্য
বাংলাদেশ থেকে সরাসরি আকাশপথে কার্গো পরিবহনে যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা এ মাসেই আসতে পারে। বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এরই মধ্যে কয়েক দফা বৃটিশ গোয়েন্দাদের সঙ্গে চিঠি চালাচালি করে বিষয়টির সুরাহা করেছেন। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) অডিট টিম এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সিভিল এভিয়েশনের কাছে হস্তান্তর করেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বেবিচকের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল নাঈম হাসান জাগো নিউজকে বলেন, সব কিছু ঠিক থাকলে এ মাসের মধ্যেই শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার বিষয়ে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা এবং আকাশপথে সরাসরি পণ্য পরিবহনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে যুক্তরাজ্য। সম্প্রতি ব্রিটিশ নিরাপত্তা গোয়েন্দারা বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করছেন। সফরকারী দল শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা স্বচক্ষে খুঁটিয়ে দেখেছেন।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের মানদণ্ড অনুযায়ী একটি বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সূচক ন্যূনতম ৬০ থাকতে হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশনের নিরাপত্তা সূচক ৭৭ দশমিক ৪৬-এ উন্নীত হয়েছে। ২০১২ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৫০ দশমিক ২। যে কারণে এ মাসের শেষেই শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তার বিষয়ে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে যুক্তরাজ্য।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন জাগো নিউজকে বলেন, শাহজালাল বিমানবন্দরে লোকজনের যাওয়া-আসা, ব্যাগেজ হ্যান্ডলিং, বিস্ফোরক চিহ্নিত করার ব্যবস্থা ও বিমানে খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় নিরাপত্তার মতো বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু পরামর্শ দিয়েছিল যুক্তরাজ্য। যাত্রীদের চেক ইনের সময় এখন বেল্ট, ঘড়ি বা জুতো খুলতে বলা হচ্ছে। তাদের পরামর্শে স্ক্যানিং যন্ত্রসহ বিস্ফোরকের সন্ধানে বেশ কিছু উন্নত যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। ককপিট ও কেবিন ক্রু ছাড়াও ব্যাগেজ হ্যান্ডলিংয়ের সঙ্গে জড়িতদের ব্যাপারে গোয়েন্দা ও পুলিশের ক্লিয়ারেন্স নেয়া হয়েছে। তাদের দেয়া সব শর্ত পূরণ করে বাড়তি সফলতা দেখানোর কারণে তারাও সন্তুষ্ট। ফলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে আর কোনো বাধা নেই।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের শেষ দিকে সন্ত্রাসী হামলায় মিশরের শারম আল শেখ বিমানবন্দর থেকে উড়ে যাওয়া একটি রুশ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর ব্রিটেনের পরিবহন দফতর বাংলাদেশসহ বিশ্বের কিছু দেশকে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বাড়াতে তাগাদা দিতে থাকে। বিশেষ করে যে সব দেশ থেকে ব্রিটেনে সরাসরি বিমান যায়, সেসব দেশের ওপর তারা নজর দিতে শুরু করে। নিরাপত্তা না থাকার অজুহাতে ২০১৬ সালের মার্চে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাজ্য।
আরএম/এআরএস/জেআইএম