চার স্থলবন্দর উন্নয়নে ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
দেশের চারটি স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে ১৫ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশ রিজিওনাল কানেকটিভিটি প্রজেক্ট-১ এর আওতায় সিলেটের শেওলা, সাতক্ষীরার ভোমরা, যশোরের বেনাপোল ও খাগড়াছড়ির রামগড় স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন করা হবে। সেইসঙ্গে একটি সিঙ্গেল উইন্ডো ব্যবস্থাও চালু করা হবে।
বৃহস্পতিবার শেরেবাংলা নগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সম্মেলন কক্ষে এ সংক্রান্ত একটি ঋণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। ইআরডি সচিব কাজী শফিকুল আযম এবং বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান চুক্তিতে সই করেন।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পটির আওতায় মোট তিনটি কম্পোনেন্ট রয়েছে। বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেল এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টম বিভাগ পৃথকভাবে এগুলো বাস্তবায়ন করবে।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে, ১৬ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল হতে ব্যয় করা হবে ১ কোটি ৫২ লাখ ডলার, আর অবশিষ্ট অর্থায়ন হবে বিশ্বব্যাংকের তরফে। প্রকল্পটি জানুয়ারি ২০১৭ হতে ডিসেম্বর ২০২১ মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে। এ ঋণের ছাড়কৃত অর্থের ওপর বার্ষিক শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সুদ এবং অনুত্তোলিত অর্থের উপর প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ হারে কমিটমেন্ট ফি প্রদান করতে হবে। ছয় বছরের রেয়াতকালসহ ৩৮ বছরে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
এসময় জানানো হয়, প্রকল্পটির মাধ্যমে স্থলবন্দরগুলোর বাণিজ্যিক অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হবে। এর ফলে প্রতিবেশী ভারত, নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে আঞ্চলিক বাণিজ্য সুবিধা বাড়বে। ভারতের সঙ্গে স্থলপথে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই চারটি বন্দর খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এ স্থলবন্দরগুলোর উন্নয়ন হলে পণ্যবাহী পরিবহনের ক্লিয়ারেন্স সময় কমে আসবে। উদাহরণ দিয়ে বিশ্বব্যাংক উল্লেখ করেছে, ভোমরা স্থলবন্দরে ট্রাক ক্লিয়ারেন্সের ৭২ ঘণ্টা থেকে ১২ ঘণ্টায় নেমে আসবে। অর্থাৎ ৮৩ শতাংশ সময় কমে আসবে।
এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান উল্লেখ করেছেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের যে সম্ভাবনা রয়েছে তার অর্ধেক বাণিজ্যও ভারতের সঙ্গে করতে পারছে না। বাণিজ্যের মূল প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করে বিশেষ করে পরিবহনের ক্লিয়ারেন্সের বিলম্ব কমিয়ে আনতে হবে। এ ধরনের উদ্যোগ সফল হলে আঞ্চলিক বাণিজ্য তথা বিশ্ব বাণিজ্যে বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়বে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এ প্রকল্পের মাধ্যমে একটি ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো ব্যবস্থা চালু করা হবে। এর ফলে কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনের মাধ্যমে শুল্ক ও অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থার জন্য প্রয়োজনীয় আমদানি-রফতানিসহ যাবতীয় তথ্য এক স্থানে জমা দেয়া যাবে। ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সময় ও খরচ কমে আসবে।
কাজী শফিকুল আযম উল্লেখ করেন, গেল পাঁচ বছরে বাংলাদেশের বাণিজ্যের আকার দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু আমাদের সম্ভবানা তার চেয়ে বেশি। স্থলবন্দরগুলোর অবকাঠামো উন্নত হলে ভারতের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসবে। পাশাপাশি নেপাল, ভুটানের সঙ্গেও বাণিজ্যিক কার্যক্রম বাড়বে।
এমএ/জেডএ/জেআইএম