উৎপাদনমুখী শিল্পায়নের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ
এশিয়ার অর্থনীতির চালিকাশক্তি চীন, ভারত ও আশিয়ান অঞ্চলের দেশগুলোর কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত বাংলাদেশ বর্তমানে উৎপাদনমুখী শিল্পায়নের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
ভারতের টাইমস গ্রুপ আয়োজিত ইকোনমিক টাইমস এশিয়া ব্যবসায়ী সম্মেলনে সম্মানিত অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ মন্তব্য করেন। বুধবার মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে মালয়েশিয়ার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী মোস্তপা মোহামেদ, ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী শ্রী সুরেশ প্রভু, শ্রীলঙ্কার বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণা বিষয়কমন্ত্রী সুশীল প্রেমাজয়ান্তা, মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত আফগানিস্তানের রাষ্ট্রদূত আতিকুল্লাহ আতফামাল, তাইওয়ানের বহিঃবাণিজ্য উন্নয়ন কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান ড. চুয়াং সু হং, কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রপতির উপমন্ত্রী ওউক প্রেচিয়া ও মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত চার্লস জোসে বক্তব্য দেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের উদ্যোগ বাংলাদেশকে টেকসই ও জ্ঞানভিত্তিক শিল্পায়নের পথে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি হাইটেক শিল্পপার্ক স্থাপনের কর্মসূচি এদেশে দক্ষ ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাত গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, শিল্পায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে দ্রুত একটি অর্থনৈতিক রূপান্তর ঘটেছে। কৃষিনির্ভর অর্থনীতি থেকে বাংলাদেশ ক্রমেই একটি যন্ত্রচালিত, উৎপাদনমুখী, বৈচিত্রময় ও মূল সংযোজনকারী অর্থনীতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জাতীয় প্রবৃদ্ধির প্রায় ৮০ ভাগ উৎপাদনমুখী ও সেবাশিল্পখাত দখল করেছে। বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ছাপ ক্রমেই জোরদার হচ্ছে বলে তিনি জানান।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বিনিয়োগের জন্য বর্তমানে বাংলাদেশে সবচেয়ে উপযোগী পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মাঝেও বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে জিডিপি, রফতানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছে। এ দেশে বিনিয়োগে দেশি-বিদেশি সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রচলিত আইন ও শুল্ক কাঠামো বিদেশি বিনিয়োগের সর্বোত্তম সুরক্ষা দিচ্ছে।
বর্তমান সরকার সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী বলে উল্লেখ করে তিনি বাংলাদেশের উদীয়মান জাহাজনির্মাণ ও রিসাইক্লিং, রাসায়নিক সার, অটোমোবাইল, হালকা প্রকৌশল, কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, ওষুধ, সিরামিক, প্লাস্টিক, আইসিটি, সামুদ্রিক সম্পদ আহরণ, পর্যটন, চিকিৎসা সরঞ্জাম, নবায়ণযোগ্য জ্বালানি এবং টেলিযোগাযোগখাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, সম্মেলনে বিশ্বের ২০টি দেশের ব্যবসায়িক নেতা, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী, ব্যাংকার, শিক্ষাবিদ, থিংকট্যাংক, বিশ্বব্যাংক, এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক আর্থিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও সুশীল সমাজের ৪ শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেন।
এসআই/বিএ