১০ শ্রেণির পেশাজীবীর আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক
আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন দাখিলে আরও কঠোর হচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আয়কর অধ্যাদেশ অনুসারে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার করদাতার রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক হচ্ছে। এর মধ্যে ১০ শ্রেণির পেশাজীবীদের জন্য রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এনবিআরের সর্বশেষ তালিকা অনুযায়ী, চলতি বছর থেকে এ নিয়ম কার্যকর হয়েছে।
এনবিআরের নির্দেশনা অনুসারে, যেসব পেশাজীবীর বাধ্যতামূলক রিটার্ন জমা দিতে হবে তারা হলেন- চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, হিসাববিদ, ব্যয় ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক বিশেষ হিসাববিদ, প্রকৌশলী, স্থপতি, জরিপকারী, আয়কর পেশাজীবী এবং সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা স্থানীর সরকারে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদার।
এনবিআর জানিয়েছে, আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এই রিটার্ন জমা দেয়া যাবে। রিটার্নে ২০১৬ সালের জুলাই থেকে ২০১৭ সালের জুন মাস পর্যন্ত আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে হবে। আয় করযোগ্য হলে কর দিতে হবে, নতুবা নয়।
তবে কিছু কিছু ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক। যেমন বণিক বা শিল্পবিষয়ক অথবা ব্যবসায়ী সংঘের সদস্য এমন ব্যক্তিদের অবশ্যই বছর শেষে আয়কর বিবরণী জমা দিতে হবে। আবার অনেকেই সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করেন, তারাও বাধ্যতামূলক রিটার্ন দেয়ার তালিকায় আছেন। অন্যদিকে কোনো ব্যক্তি কোম্পানির শেয়ারধারী পরিচালক বা কর্মী, ফার্মের অংশীদার হলে তাকেও রিটার্ন দিতে হবে।
এ ছাড়া এবারই প্রথমবারের মতো বেসরকারি চাকরিজীবীদের আয়কর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। করযোগ্য আয় থাকুক, না থাকুক; তাদের রিটার্ন জমা দিতেই হবে। তা না হলে ওই চাকরিজীবী যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, ওই প্রতিষ্ঠান তাকে দেয়া বেতন-ভাতা খরচ হিসেবে দেখাতে পারবে না। আবার সরকারি চাকরি করেন কিংবা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কোনো চাকরিজীবীর বেতন-ভাতা যদি ১৬ হাজার টাকার বেশি হয়, কিন্তু করযোগ্য আয় নেই, তাদেরও বাধ্যতামূলক আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে।
এদিকে সম্পদ ও জীবনযাত্রার বিবেচনায়ও আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কারও যদি একটি গাড়ি থকে, কিংবা কেউ যদি ঢাকা ক্লাব, গুলশান ক্লাব, উত্তরা ক্লাবের মতো অভিজাত ক্লাবের সদস্য হন, এনবিআর ধরেই নেবে তার বার্ষিক আয় আড়াই লাখ টাকার বেশি। তাই এসব ব্যক্তিকে অবশ্যই আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে।
এনবিআর জানিয়েছে, আয়কর রিটার্ন জমা না দিলে পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন বা সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হওয়া যাবে না। জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে প্রার্থীদের রিটার্ন জমার অনুলিপি নির্বাচন কমিশনে জমা দিতে হয়।
এ ছাড়া কেউ যদি আগের তিন বছরে একবারও কর দিয়ে থাকেন, তবে তাকেও অবশ্যই রিটার্ন আয়কর জমা দিতে হবে।
এমএ/এমএমজেড/আরএস/এমএস