ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

রফতানি আয়ে হোঁচট

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:৩৯ পিএম, ০৮ অক্টোবর ২০১৭

চলতি অর্থবছরের প্রথম দু’মাসে রফতানি আয়ে আশানুরুপ প্রবৃদ্ধির পর তৃতীয় মাসে রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ।

একক মাস হিসেবে সেপ্টেম্বরে আয় হয়েছে ২০৫ কোটি ৪১ লাখ মার্কিন ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬ দশমিক ৭২ শতাংশ কম। এ মাসে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। রোববার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদন অনুসারে, রফতানি আয়ে সেপ্টেম্বরের হোঁচটের ফলে ত্রৈমাসিক হিসাবেও প্রবৃদ্ধি কমেছে। ফলে চলতি অর্থবছরের (২০১৭-১৮ ) প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রফতানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তা অর্জিত হয়নি। এ সময় আয়ের লক্ষ্য ছিল ৮৯১ কোটি ৬০ লাখ ডলার। কিন্তু আয় হয়েছে ৮৬৬ কোটি ২৭ লাখ ডলার। এ হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় হয়েছে ২ দশমিক ৮৪ শতাংশ কম।

এতে আরও বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে পোশাক রফতানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ।

প্রতিবেদনের তথ্য মতে, দেশের মোট রফতানি আয়ের ৮০ শতাংশেরও বেশি আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। চলতি অর্থবছরে প্রথম দু’মাসে (জুলাই-আগস্ট) এ খাতে আয় হয়েছে ৫৫২ কোটি ৪২ লাখ মার্কিন ডলার। এ দুই মাসে তৈরি পোশাক খাতে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৯৩ কোটি ৮২ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১১ দশমিক ৮৭ শতাংশ। তবে বিগত অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতে আয় হয়েছিল ৪৮৪ কোটি ৩৮ লাখ ডলার।

চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে তৈরি পোশাক খাতে যে রফতানি হয়েছে তার মধ্যে ওভেন পোশাক থেকে এসেছে ৩২৯ কোটি ৭১ লাখ ডলার এবং ৩৭৪ কোটি ৬৯ লাখ ডলারের নিট পোশাক রফতানি হয়েছে। আগের অর্থবছরের তুলনায় নিট পোশাকে ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং ওভেন পোশাকে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। পাশাপাশি নিট পোশাক রফতানিতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও ওভেনে রফতারি আয়ের লক্ষমাত্রা অজর্নে ব্যার্থ হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন কারণে সক্ষমতা হারিয়ে প্রায় এক হাজার ২০০টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বিশেষ করে অ্যাকর্ড অ্যালায়েন্স পরিদর্শনের পর কিছু কারখানা আংশিক, সাময়িক ও পূর্ণাঙ্গভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণ ও বাড়িভাড়াসহ অন্যান্য ব্যয় মিটিয়ে অনেকের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে কঠিন সঙ্কটের মুখে আছে পোশাক শিল্প। এরপরও পোশাক রফতানি আয়ে প্রবৃদ্ধি ও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে। কিন্তু আমরা দুশ্চিন্তায় আছি সামনের দিনগুলো নিয়ে।

বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট বলেন, পোশাক তৈরির উপকরণবোঝাই জাহাজগুলো থেকে পণ্য খালাসের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। পণ্য খালাস করতে না পারায় কন্টেইনার ভাড়া বাবদ বন্দর ও জাহাজ কোম্পানিকে অতিরিক্ত জরিমানা দিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, টানা আড়াই মাসের বেশি সময় ধরে বন্দরে জাহাজজট চলমান থাকার সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে জাহাজীকরণ জটিলতা। কন্টেইনার না নিয়েই জাহাজ বন্দর ছেড়ে যাচ্ছে, যা এর আগে কখনই ঘটেনি। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে বিদেশি ক্রেতারাও সময় মতো পোশাক পাবে না।

ইপিবির তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের তিন মাসে মাছ রফতানিতেও যথেষ্ট প্রবৃদ্ধি হয়েছিল। এ সময়ে ১২ কোটি ৭২ লাখ ডলার রফতানি লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ১৬ কোটি ৮২ লাখ ডলার; যা চলতি অর্থবছরের মোট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৩ দশমিক ০৮ শতাংশ বেশি। গত বছরের একই সময়ে এ খাতে আয় ছিল ১৩ কোটি ৬৭ লাখ ডলার।

এ ছাড়া গত তিন মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানিতে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। এ খাতে আয় হয়েছে ৩২ কোটি ৪৬ লাখ ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ৬ শতাংশ কম।

একই সময়ে প্লাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ২ দশমিক ১৯ শতাংশ। যদিও তা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ কম। গত দুই মাসে এ খাতে মোট আয় হয়েছে দুই কোটি ২৪ লাখ ডলার। এ ছাড়া গত জুলাই-সেপ্টেম্বরে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি আয়েও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। তবে গত অর্থবছরের তুলনায় এ খাতে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ। এ সময়ে মোট ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় হয়েছে ২ কোটি ৩৬ লাখ ডলার।

এমএ/এনএফ/জেআইএম

আরও পড়ুন