খুচরা বাজারে কমেনি চালের দাম
সরকারের নানা উদ্যোগে পাইকারি বাজারে চালের দাম কিছুটা কমলেও খুচরা বাজারে এর প্রতিফলন দেখা যায়নি। ফলে বাড়তি দামেই চাল কিনতে হচ্ছে সর্বসাধারণকে। তবে দাম কমবে বলে মনে করছেন খুচরা বিক্রেতারা। কারণ গত তিনদিন বাজার স্থিতিশীল রয়েছে।
রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও শান্তিনগরসহ বিভিন্ন এলাকার খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে এমন তথ্য জানা গেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর পাইকারি বাজারে মোটা চালের দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা পর্যন্ত বাড়ে। এতে দুর্ভোগে পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষ।
বাজার নিয়ন্ত্রণে গত রোববার দেশের বিভাগীয় ও জেলা শহরে খোলাবাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) কার্যক্রম শুরু করে সরকার। সেইসঙ্গে অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়াও হচ্ছে।
মিরপুরের মুসলিম বাজারের খুচরা বিক্রেতা আরিফ হোসেন বলেন, গত তিনদিনে বাজারে চালের দাম বাড়েনি। তবে কমেওনি।
তিনি বলেন, ঈদের পর চালের দাম ব্যাপক হারে বাড়ে, সেটা অস্বাভাবিক। আশা করি ওএমএস চালুর পর দাম কিছুটা কমবে। তবে সেটা কবে নাগাদ হবে তা বলা মুশকিল।
রাজধানীর খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি যে মোটা চাল ৪১-৪২ টাকায় বিক্রি হত তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকায়। অন্যান্য চালের দামও প্রায় একই হারে বেড়েছে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর পাইকারি বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কমতে শুরু করেছে সব ধরনের চালের দাম । একদিনের ব্যবধানে বস্তাপ্রতি দাম কমেছে ৫০ থেকে ১০০ টাকা।
পাইকারি চাল বিক্রেতা বাবু বাজারের জনপ্রিয় রাইস এজেন্সির পরিচালক টগর আহাম্মেদ জাগো নিউজকে বলেন, বাজারে চালের দাম কমতির দিকে। এর পেছনে দুটি কারণ। একদিকে সরকারের খোলাবাজারে চাল বিক্রি অন্যদিকে অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে সরকারের অভিযান পরিচালনা ।
অভিযান অব্যাহত থাকলে চালের দাম দু-তিনদিনের মধ্যেই সহনীয় পর্যায়ে আসবে বলে মনে করেন তিনি।
অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে চালের দাম কমানোর আশ্বাস দিয়েছেন চালকল মলিক, ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চালকল মালিক, ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকদের সঙ্গে বৈঠকে চাল ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন দাবি পূরণের আশ্বাস দেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। মন্ত্রীর আশ্বাসের পর চাল ব্যবসায়ীরা দাম কমানোর কথা জানান।
বিশ্বব্যাংকের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সমাজের দরিদ্র শ্রেণির মানুষের আয়ের ৬০ শতাংশ চলে যায় খাবার সংগ্রহে। পণ্যের দাম বাড়লে বিপুলসংখ্যক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে আসবে। এ অবস্থায় খাদ্যপণ্যের দাম বাড়লে দরিদ্র মানুষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এ বিষয়ে কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, দেশের মানুষের প্রধান খাদ্যপণ্য চাল। যখন এই পণ্যের দাম বাড়তে থাকে তখন ভুগতে হয় দেশের প্রতিটি মানুষকে। বাস্তবতা হচ্ছে, লাগাতারভাবে চালের দাম বাড়ছে। যে হারে চালের দাম বাড়ছে এতে বুঝতে হবে নিশ্চয় এর পেছনে ব্যবসায়ীদের কারসাজি রয়েছে।
সরকারের বর্তমান উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অবৈধ আড়তদারদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। এর ফলে চালের দাম ফের সহনীয় পর্যায়ে আসবে।
এমএ/জেডএ/এমএআর/বিএ