‘বিষফোঁড়া’ ভাঙতে আরও এক বছর সময় চায় বিজিএমইএ
রাজধানী হাতিরঝিলের ‘বিষফোঁড়া’ হিসেবে খ্যাত সোনারগাঁও হোটেলের পূর্ব পাশে অবস্থিত বাংলাদেশ পোশাকশিল্প প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) ১৬তলা ভবন ভাঙতে আরও এক বছর সময় চায় সংগঠনটি। শনিবার বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্ট ছয় মাস সময় দিয়ে আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিজিএমইএর বর্তমান ভবন ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমরা রায় ঘোষণার প্রথম দিন থেকেই বলে আসছি নতুন ভবন নির্মাণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চলে যাব। তবে নতুন ভবন সম্পন্ন হতে আরও এক বছর সময় লাগবে। তাই আদালতের কাছে আমরা আরও এক বছর সময় চেয়েছি। আসা করছি, সামগ্রিক অর্থনীতিতে এ শিল্পের অবদান বিবেচনা করে আদালত সময় দেবেন।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, পোশাকশিল্প দেশের সবচেয়ে বড় রফতানি খাত। আর এ শিল্পের মুখপাত্র সংগঠন হচ্ছে বিজিএমইএ। সংগঠনটি ৩২০০ কারখানা ও ৪৪ লাখ শ্রমিকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে একনিষ্ঠভাবে কাজ করে। গুরুত্বপূর্ণ এ সংগঠনের সব দাফতরিক কাজ হয় বিজিএমইএ ভবনে। বিজিএমইএ বেসরকারি খাতের সংগঠন হলেও অনেক সরকারি কাজ করতে হয়। সদস্যভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ইউডি, ইউপি, সি/ও এবং মেশিনারিজ আমদানির প্রত্যয়নপত্র বিজিএমইএর দফতর থেকে দেয়া হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি জানান, রাজধানী উত্তরা তৃতীয় প্রকল্পে ১৭ নম্বর সেক্টরের বিজিএমইএ ভবন নির্মাণে ৫ বিঘা জমির বরাদ্দ দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার জায়গার টাকা পরিশোধ করেছি। ভবন নির্মাণে কনসালটেন্ট নিয়োগ দিয়েছি। আশা করছি এক বছরের মধ্যে ভবন নির্মাণ সম্পূর্ণ হবে।
এর আগে গত ১২ মার্চ ছয় মাসের সময় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বিজিএমইএ’র তিন বছরের আবেদনের শুনানি নিয়ে ওইদিন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের তিন সদস্যের বেঞ্চ ভবন ভাঙতে ছয় মাস সময় দেন।
বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলতে আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর রিভিউ আবেদন করে বিজিএমইএ। আবেদনে আপিল বিভাগের রায় স্থগিত করে বহুতল ভবনটি ভেঙে ফেলার জন্য তিন বছরের সময় চাওয়া হয়।
তার আগে গত বছরের ৮ নভেম্বর বিজিএমইএ ভবন ভাঙার বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ পায়। গত ২ জুন বিজিএমইএ’র কর্তৃপক্ষের করা আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন (লিভ টু আপিল) খারিজ করে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ চার সদস্যের বেঞ্চ। হাইকোর্টের রায়ে ৯০ দিনের মধ্যে ভবনটি ভেঙে ফেলার কথা বলা হয়।
জমির মালিকানা না থাকা ও জলাধার আইন লঙ্ঘন করে হাতিরঝিলে বিজিএমইএ ভবন নির্মাণ করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল ভবনটি ভেঙে ফেলার রায় দেন হাইকোর্ট। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ ৬৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এরপর ওই বছরের ২১ মে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে।
এসআই/আরএস/আইআই