ঈদ আনন্দ বাড়াতে নতুন টাকা বিনিময় শুরু
ঈদ আনন্দে বাড়তি উদ্দীপনা যোগ করতে প্রতিবারের মত এবারও ঈদুল আজহার আগেই নতুন টাকার নোট বাজারে ছেড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রোববার সকাল থেকে নতুন টাকার নোট বিনিময় শুরু হয়েছে। চলবে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সব শাখা অফিস এবং রাজধানীর বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ১৪টি শাখার মাধ্যমে নতুন নোট বিনিময় করা যাবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নির্দিষ্ট অংকের নতুন নোট নিতে পারবেন গ্রাহকরা।
সকালে সরেজমিনে বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে দেখা যায়, ৩০তলা ভবনের নিচতলায় নতুন নোটের জন্য অপেক্ষা করছেন গ্রাহকরা। প্রথমে লাইনে দাঁড়িয়ে আঙুলের ছাপ দিয়ে টোকেন নিচ্ছেন তারা। পরে চেয়ারে সারিবদ্ধভাবে বসে অপেক্ষা করেন। সিরিয়াল অনুযায়ী ডাক পড়লেই মিলছে নতুন টাকার নোট।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা জাগো নিউজকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে
বাংলাদেশ ব্যাংক আজ নেকে নতুন টাকার নোট বিনিময় শুরু করেছে।
তিনি জানান, এবারও বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ) পদ্ধতিতে নতুন টাকা বিনিময় করা হচ্ছে। ফলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। সুশৃঙ্খলভাবে গ্রাহকরা নতুন টাকার নোট নিতে পারছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নতুন টাকার নোট নিতে এসেছেন আবির হোসেন। তিনি জানান, মঙ্গলবার গ্রামের বাড়ি যাবেন। মতিঝিলে একটি কাজে এসেছিলেন। সময় পয়ে ছি নতুন টাকার নোট নিতে এসেছেন। নতুন নোট বড়-ছোট সবার পছন্দ। বাইরে থেকে নিলে বাড়তি টাকা গুণতে হয়। তাই এখান থেকে নিয়ে যাচ্ছেন।
নতুন টাকা নিতে এসেছেন নারী ও বৃদ্ধরাও। এমন একজন ৮২ বছরের বৃদ্ধ আব্দুল বাতেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, আমি আগে সোনালী ব্যাংকে চাকরি করতাম। প্রতিবছরই নতুন নোট নিতাম। এখন গ্রামে থাকি তাই নিতে পারি না। ঢাকায় আসছি সোনালী ব্যাংকে একটি কাজে। সেখানে কাজ শেষে নতুন নোট নিতে এসেছি।
নতুন টাকা দিয়ে কি করবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি মুচকি হেসে বলেন, ঈদে চকচকে নোটের আনন্দই অন্যরকম। যা বলে বোঝানো যাবে না। ছেলের ছোট পোলা- মাইয়া আছে, তাদের দেব।
বাংলাদেশ ব্যাংকসহ ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের ১৪টি শাখা থেকে নতুন টাকা বিনিময় করা হচ্ছে। ৫ টাকা থেকে ১০০ টাকা মূল্যমানের নতুন নোট প্রতিটি একটি প্যাকেট করে বিশেষ ব্যবস্থায় বিনিময় করা হচ্ছে। তবে একই ব্যক্তির একাধিকবার নতুন নোট গ্রহণের সুযোগ নেই।
এবার একজন ব্যক্তি বিভিন্ন মূল্যমানের সর্বোচ্চ সাড়ে ১৮ হাজার টাকার সমপরিমাণ নতুন টাকা বদলে নিতে পারবেন। এর মধ্যে ১০০ টাকার ১ প্যাকেট বা ১০ হাজার টাকা, ৫০ টাকার ১ প্যাকেট বা ৫ হাজার টাকা, ২০ টাকার ১ প্যাকেট বা ২ হাজার টাকা, ১০ টাকার ১ প্যাকেট বা ১ হাজার টাকা ও ৫ টাকার ১ প্যাকেট বা ৫০০ টাকা নেওয়ার সুযোগ রাখা হচ্ছে।
তবে নোট উত্তোলনকালে কেউ ইচ্ছা করলে কাউন্টার থেকে পরিমাণ নির্বিশেষে যেকোনো মূল্যমানের ধাতব মুদ্রা গ্রহণ করতে পারবেন।
রাজধানীতে যেসব ব্যাংকে ও শাখায় নতুন নোট পাওয়া যাবে তার মধ্যে রয়েছে, ন্যাশনাল ব্যাংকের যাত্রাবাড়ী শাখা, অগ্রণী ব্যাংকের এলিফ্যান্ট রোড শাখা, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা সিটি (পান্থপথ) শাখা, ব্যাংক এশিয়ার ধানমন্ডি শাখা, ঢাকা ব্যাংকের উত্তরা শাখা, জনতা ব্যাংকের আব্দুল গণি রোড করপেরেট শাখা, দি সিটি ব্যাংকের মিরপুর শাখা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের মালিবাগ শাখা, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের বনানী শাখা, সোনালী ব্যাংকের রমনা শাখা, ওয়ান ব্যাংকের বাসাবো শাখা, আইএফআইসি ব্যাংকের গুলশান শাখা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের মোহাম্মদপুর শাখা ও রূপালী ব্যাংকের মহাখালী শাখা।
এসআই/এসআর/আইআই/আরআইপি