গ্রাহকদের ঋণখেলাপি করছে ব্যাংক ও ব্যাংকাররাই : অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অভিযোগ করে বলেছেন, গ্রাহকদের ঋণখেলাপি বানাতে ব্যাংক ও ব্যাংকাররাই বেশি দায়ী। একজন গ্রাহক প্রথমে যখন ঋণ নিতে আসেন তখনই তাকে নিজের কব্জায় আনতে খেলাপি করানোর চিন্তা করেন ব্যাংকাররা। আমাদের দেশের ব্যাকিং খাতের জন্য এটা একটা খুবই খারাপ সংস্কৃতি।
শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ আয়োজিত ‘রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকের অবস্থা : চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপায় শীর্ষক’ এক কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, যখন একজন গ্রাহককে ঋণ দেয়া হয় তখন থেকেই ব্যাংকিং সিস্টেমে একটা ধারণা চালু হয়ে যায় এই ব্যাটাকে যে করেই হোক ডিফলটার বানাতেই হবে। এজন্য ব্যাংকাররা যা যা করার সবই করেন। এবং এক সময় ওই গ্রাহক খেলাপি হয়ে যান। এভাবে ভালো ভালো প্রকল্পে ঋণ দেয়া হয়। কিন্তু ঋণটা এমনভাবে দেয়া হয় যেন গ্রাহক খেলাপি হয়ে যান। প্রত্যেক ব্যাংকারই এটা চান। কেননা ওই ব্যাংকার মনে করেন খেলাপি হলে গ্রাহক আমার কব্জার মধ্যে চলে আসবে। এটা (ব্যাংকারদের) সবার পরিহার করা দরকার।
তিনি আরও বলেন, দেশে একটি ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়া মানে কিন্তু শুধু একটি ব্যাংকের সমস্যা হিসেবে দেখা দেয় না। সেটা হয় পুরো ব্যাংক খাতের এমনকি পুরো অর্থনীতির সমস্যা। তবে আশার দিক হচ্ছে এ দেশে স্বাধীনতার পর কোনো ব্যাংকই (লাটে উঠেনি) দেউলিয়া হয়নি। স্বাধীনতার আগে দেউলিয়া হয়েছিল কমরেড ব্যাংক (ইস্পাহানি গ্রুপের), ওই ব্যাংক লাটে ওঠার পর আর কোনো ব্যাংক কিন্তু লাটে ওঠেনি। আমরা এ খাতটাকে মোটামুটি ভালোভাবেই চালাচ্ছি। কমরেড ব্যাংক লাটে ওঠায় তার (অর্থমন্ত্রীর) নিজেরও ১৪০ টাকা লোকসান হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান। মূল প্রবন্ধও উপস্থাপন করেন এই সচিব। বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. আব্দুর রাজ্জাক, অর্থবিভাগের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। এতে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শীর্ষ কর্মকর্তা, সরকারের সাবেক ও বর্তমান সচিবরা এবং ব্যাংক ও প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
এমইউএইচ/জেডএ/আরআইপি